Lead

পঞ্চগড়ে হামলা, রাত কাটছে খোলা আকাশের নিচে

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে আন্দোলন ও সংঘর্ষের ঘটনায় আরও তিনটি মামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৭৩ জনকে। শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আহমদ নগর এলাকায় পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ঘটনার আটদিন পরেও ফিরেনি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা। এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে আহমদ নগরসহ আশপাশের এলাকায়। খোলা আকাশের নিচে সেখানে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তারা। অনেকে জলসা মাঠে তাঁবু টানিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার মাঠের পাশে জামেয়া আহমদিয়া বাংলাদেশ অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আহমদ নগরসহ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, গ্রেপ্তার আতঙ্কে জেলা সদরের আহমদ নগরের আশপাশের কয়েকটি গ্রাম ও বোদা উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ জানায়, আতঙ্কের কিছু নেই। যারা জড়িত তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন, তাদের গ্রেপ্তার আতঙ্ক নেই। তাদের হয়রানি করা হবে না। সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ পর্যন্ত ১৬ মামলায় ১৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আহমদ নগরসহ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।’

গত ৩ মার্চ (শুক্রবার) আহমদনগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা শুরু হয়। এদিন জলসা বন্ধের দাবিতে জুমার নামাজের পর পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সমবেত হন। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে করতোয়া সেতুর দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়।

একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন পুলিশ ধাওয়া দিলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। একদল বিক্ষোভকারী আহমদনগর এলাকায় গিয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অন্তত শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় দুইজন নিহত, পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে বাধ্য হয়ে প্রশাসন রাত ৮টায় জলসা বন্ধ করে দেয়।