সারাদেশ

নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা সদরের মধ্যবাজার মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা সদরের মধ্যবাজার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হলে বাধা দেয় পুলিশ। ওই সময় মিছিল নিয়ে সেখানে আসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের ৩০ জন আহত হন।

কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ খায়ের বলেন, ‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মধ্যবাজারে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সড়কে অবস্থান নেওয়ায় বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম দিকের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে আসতে পারেননি। বাজারের পশ্চিম দিকে মারকাস মসজিদ মোড়ে অবস্থান করছিলেন আমাদের নেতাকর্মীরা। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সময়ে আমাদের ওপর গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে যুবদল নেতা তাইমুল, খোকন, স্বপন, মামুন, সবুজ, সোহানুর ও কাশেম গুলিবিদ্ধ হন। সেই সঙ্গে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রসুল, সদস্য সচিব শেখ রবিন মোবারক, বদির জামাল, রিপন, মাসুদ ও রুবেলসহ ২২ জন আহত হন। তাদের নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল ও দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করেছেন। এতে সদর ইউনিয়নের সদস্য এমদাদুল হক আহত হন। তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ‘মারকাস মসজিদ মোড় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করতে চান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের আটকাতে চাইলে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’

এদিকে, হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় গুলিবিদ্ধসহ দলের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’