নূর হোসেন ও তার স্ত্রীকে দুদকের নোটিশ
ঢাকা : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার তার ও তার ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদের হিসেব চেয়ে পৃথক দুটি নোটিশ জারি করে কমিশন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দুদকের কাছ থেকে পাঠানো একটি নোটিশ কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিকের কাছে নূর হোসেনকে দেয়ার জন্য পাঠানো হয়। নূর হোসেন বর্তমানে কাশিমপুর কারাগার-২ এ রয়েছেন। অন্যটি তার স্ত্রীর নামে নারায়ণগঞ্জে নূর হোসেনের বাসভবনে পাঠানো হয়।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৯ মে অনুসন্ধান শুরু করার পর নূর হোসেনের নামে-বেনামে প্রায় ৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। তবে তিনি ভারতে পলাতক থাকায় এতদিন সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করতে পারেনি দুদক। ফলে অনুসন্ধান কাজ কার্যত বন্ধ ছিল।
দুদকের অনুসন্ধানে নূর হোসেনের মোট ৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে পাঁচতলা একটি বাড়ি এবং নূর হোসেন ও তার সন্তানদের নামে নারায়ণগঞ্জ-চিটাগাং রুটে চলাচলকারী এবিএস পরিবহনের লাক্সারি ৩০টি বাস পাওয়া গেছে। এসব গাড়ি নারায়ণগঞ্জ টু চিটাগাং রোডে চলাচল করলেও এখন বন্ধ রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে ওই সব সম্পদের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে নূর হোসেনের আয়কর নথিতে মোট আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা। যেখানে আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ চাষ। তবে আয়কর ফাইলে কোথাও তার বাড়ি কিংবা বাসের কথাটি উল্লেখ নেই।
জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ট্রাকের হেলপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় কয়েক বছরে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তিনি। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি, মাছের খামার এবং পরিবহন ব্যবসা। তার ছোবল থেকে বাদ যায়নি মসজিদের সম্পত্তিও।
দুদক সূত্রে আরো জানা যায়, নূর হোসেন কমপক্ষে ৫০ বিঘা জমির মালিক বলে অভিযোগ রয়েছে, যার অধিকাংশই দখল করা হয়েছে। শিমরাইলে তার বাড়ির পেছনে রয়েছে ৪০ বিঘার মৎস্য খামার। খামারের মালিকদের বঞ্চিত করে নূর হোসেন ১৫ বছর ধরে চাষ করেছেন। রয়েছে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো মসজিদ ভেঙে মাছের আড়ৎ স্থাপন করার অভিযোগ।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ট্রাক হেলপার নূর হোসেন ১৯৮৭ সালে ট্রাক ড্রাইভার, ১৯৯১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ২০১২ সালে সিটির কাউন্সিলর হন।