অন্যান্যসব সংবাদ

নতুন সংকটে সম্প্রচার গণমাধ্যম: ব্রডকাস্ট জার্নালিষ্ট সেন্টার-বিজেসি’র উদ্বেগ

ঢাকা জার্নাল ডেস্ক

বিগত শাসনামলে নিপীড়নমূলক আইন ও কর্তৃত্ববাদী আচরণ, মালিকানার ধরণ ইত্যাদি নানাকারণে টেলিভিশন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র তৈরির আশা জেগেছে। আবার সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা পুরনো উদ্বেগকে নতুন করে হাজির করেছে।

একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ ও বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা রূপাকে সম্প্রতি আটক করার পর তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের ও রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আটকের দিনই দায়ের করা মামলাটির এজাহারে তাদের নাম ছিল না। অসংখ্য ‘অজ্ঞাত আসামি’র মধ্যে তাদের নাম ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এই দুইজন সাংবাদিকতার অপব্যবহার বা কোন দুর্নীতি করে থাকলে তার বিচার হতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অপছন্দের কাউকে ফাঁসাতে গত শাসনামলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত মানবাধিকার বিরোধী হয়রানিমূলক ব্যবস্থার প্রয়োগ এখনো অব্যাহত রয়েছে।

শুধু তাই নয়, আদালত প্রাঙ্গনে তারা শারীরিক আক্রমণেরও শিকার হয়েছেন। রিমান্ড শুনানি চলাকালে তাদের পক্ষের আইনজীবীকে হেনস্তা এবং এজলাস কক্ষে একাত্তর টিভির রিপোর্টার ইশতিয়াক ইমনকে মারধর করা হয়। সবশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ একাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা, পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে ৭ জন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সুযোগে একটি গোষ্ঠী ভিন্ন মত দমনের অপচেষ্টা করে চলেছে যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলেছে। অভ্যুত্থানের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক হতাহত হন, অথচ বিজয়ের পর থেকে সর্বশেষ গত ১৯ আগষ্ট পর্যন্ত বেশ কয়েকটি টেলিভিশন ভবনে হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, অনেক সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন, মিডিয়া হাউস দখলের জেরে চাকরি হারাতে হয়েছে অনেককে। এছাড়া সাংবাদিকদের নানারকম মনগড়া তালিকা করে তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি সাংবাদিক সমাজের মধ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে, যা বর্তমান সরকারের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অঙ্গীকারকে চ্যালেঞ্জ করছে।

দেশের সম্প্রচার মাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রধান সংগঠন বিজেসি এ পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে সাংবাদিকের নিরাপত্তা ও কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে এবং শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপা যেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে আইনী সহযোগিতা পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছে। পাশাপাশি রহস্যজনক কারনে দীর্ঘ এক যুগ ধরে ঝুলে থাকা সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যারও দ্রুত বিচার দাবি করছে বিজেসি।

 

সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি