দাউদ মার্চেন্টকে ভারতে হস্তান্তর
ঢাকা জার্নাল: ভারতীয় সন্ত্রাসী আবদুর রউফ মার্চেন্ট ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের এক খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দাউদ মার্চেন্টকে বাংলাদেশ থেকে মুম্বাইয়ে নেওয়া হয়।
গত রোববার বিকেলে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর তাঁর অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
দাউদ মার্চেন্ট মুম্বাইয়ের সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি এবং মাফিয়া ডন বলে পরিচিত দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী।
২০০৯ সালের ২৮ মে ভারত সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক সহযোগীসহ দাউদকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পাসপোর্ট আইনে মামলা করে পুলিশ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দাউদ জামিনে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। মুক্তির পরপরই তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ৩ নভেম্বর দাউদ মার্চেন্টকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকেও অব্যাহতি দেন আদালত। সাত বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর দাউদ মার্চেন্ট মুক্তি পান। এরপর তিনি কোথায় গেছেন কিংবা তাঁকে কারও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে কি না, সে সম্পর্কে সরকারি কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির গত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দাউদ মার্চেন্টকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর তাঁর অবস্থান কোথায়, সে বিষয়ে তাঁদের কাছে তথ্য নেই।
দাউদ মার্চেন্ট ভারতের মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের ‘ডন’ হিসেবে পরিচিত দাউদ ইব্রাহিম ও ছোটা শাকিলের সহযোগী বলে এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁকে উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার মতো ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে সাংবাদিকেরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দাউদ মার্চেন্টের সাজাভোগের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ‘পুশব্যাক-পুশইনের’ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, অনুপ্রবেশের দায়ে দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। গত সপ্তাহে কারাগার থেকে ছাড়া পান। দাউদ মার্চেন্টকে দেশে ফেরাতে অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলছে ভারত। ভারতের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দাউদ মার্চেন্টকে মেঘালয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়।
খবরে বলা হয়েছে, ইন্টারপোলের সহায়তায় সীমান্তে দাউদ মার্চেন্টের হস্তান্তর-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হচ্ছে, দাউদ মার্চেন্ট অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় বিএসএফের হাতে আটক হন।
এ ব্যাপারে পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) সঞ্জয় সাক্সেনা দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘দাউদ মার্চেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই বিএসএফ জানতে পারে যে তিনি মুম্বাইয়ে গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি এবং এ মামলায় কারাবাসের সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। দাউদ মার্চেন্টকে বৃহস্পতিবার সকালেই মুম্বাই নিয়ে সেখান উচ্চ আদালতে হাজির করা হয়। তিনি বলেন, হাইকোর্ট শুক্রবার (আজ) তাঁকে দায়রা আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ১১, ২০১৬।