সংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

তিন হাজার টাকা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় স্ত্রীকে গণধর্ষণ!

19চট্টগ্রাম : অভাবের সংসারে সুখ ফেরাতে কিস্তিতে মাত্র তিন হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু সময়মত সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারার অজুুহাতে স্ত্রী  হলেন গণধর্ষণের শিকার! এমনটাই ঘটেছে চট্টগ্রামে বাকলিয়া থানা এলাকায়। এদিকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্তকতার অভিযোগে যুবলীগের এক সাবেক নেতাসহ তার সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) গভীর রাতে বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকায় খালপাড়ে একটি ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের অফিসে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।

আটককৃতরা হলো, আনোয়ারা উপজেলার পীরখাইন এলাকার সাবেক যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মো.বাহাদুর (৩৫) এবং ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নূর মোহাম্মদ একটি মাল্টিপারপাস কোম্পানি পরিচালনা করেন। গ্রেপ্তার অ্যাডভোকেট ও যুবলীগ নেতা বাহাদুরও ওই কোম্পানীতে যুক্ত আছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বস্তিবাসীদের ক্ষুদ্র্ঋণ দিয়ে আসছিলেন।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ওই মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে সুদে তিন হাজার টাকা ঋণ নেন ধর্ষিতার স্বামী মো. রাশেদ। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে প্রথম দুই কিস্তির পর আর কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মো. রাসেল ও তার স্ত্রীকে আব্দুল লতিফ হাট এলাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় নূর মোহাম্মদের দুই সহযোগী ছাব্বির এবং রাসেল।

এসময় তাদের কল্পলোক আবাসিক এলাকায় খালপাড়ে ক্ষুদ্রঋণদানকারী ওই প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে নূর মোহাম্মদ, বাহাদুর, ছাব্বির এবং রাসেল চারজনে মিলে স্বামী-স্ত্রীকে মারধর করে। রাত ১১টার দিকে বাহাদুর ওই অফিস থেকে চলে যাওয়ার পর ধর্ষিতার স্বামীকে আবারো মারধর করে তাড়িয়ে দেয় নূর মোহাম্মদ ও তার সহযোগিরা। পরে রাসেলের সহযোগিতায় রাত আড়াইটা থেকে রাতভর নুর মোহাম্মদ এবং ছাগের মিলে ওই গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

জানা গেছে, বাহাদুর একসময় দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা বারের সদস্য। আইন পেশায় পাশাপাশি নূর মোহাম্মদের সাথে মাল্টিপারপাস ব্যবসায় যুক্ত আছেন বাহাদুর।

ধর্ষিতা নিজে বাদি হয়ে গত বৃহস্পদিবার এই ঘটনায় বাকলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলো, নূর মোহাম্মদ (৩৫), সাব্বির প্রকাশ ছাগের (৩৬), রাসেল (২৫) এবং মো.বাহাদুর ওরফে অ্যাডভোকেট বাহাদুর (৩৫)।

বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বাংলামেইলকে বলেন, ‘ধর্ষিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। এই পর্যন্ত মামলার ১ নম্বর আসামি নুর মোহাম্মদ ও ওই প্রতিষ্ঠানের পার্টনার বাহাদুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মামলার প্রয়োজনে ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.