শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

তারানকোর হাতে খালেদার তালিকা

khaleda-tarnko-300x165ঢাকা জার্নাল: আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনকালীন সরকার কাদের নিয়ে গঠন করা যেতে পারে তার একটি সম্ভাব্য তালিকা বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর কাছে দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ ডিসেম্বর শনিবার রাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় প্রথম বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন তারানকোর হাতে ১৫ জনের একটি তালিকা দেন। তার তালিকায় যাদের নাম আছে তারা ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন তারানকোকে বলেন তার তালিকায় যাদের নাম আছে তারা সবাই সরকার ও বিরোধী দলের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ। একই সঙ্গে তিনি তার এই তালিকা বা এর বাইরে নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য অন্য কাউকে প্রধান উপদেষ্টা করার ও কথা বলেন।

তবে দলীয় আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বিএনপির নেতারা আবারো খালেদা জিয়ার তালিকা নিয়ে তারানকোর সঙ্গে কথা বলেন। তবে তিনি এই সময় এ ব্যাপারে কোন কথা বলেননি।

বিএনপির চেয়ারপারসনের এক উপদেষ্টা এটিএন টাইমসকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন হোটেল ওয়েস্টিনে নির্বাচনকালীন সরকারের যে গ্রহণেযাগ্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সরকারের একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, ১৯৯৬ ও ২০০১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২০ উপদেষ্টার মধ্যে থেকে ১০ জনকে নিয়ে এ সরকার হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি পাঁচটি করে নাম প্রস্তাব করবে। আর ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলের ‘ঐক্যমতের ভিত্তিতে’ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ‘সম্মানিত নাগরিককে’ এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব দেয়ারও প্রস্তাব করেন বিরোধী দলীয় নেতা।

এদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষ হলেও প্রথম দফা বৈঠকের মতো এবারও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি বিএনপির পক্ষ থেকে। সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে এ বৈঠক শুরু হয়ে ৭টার দিকে শেষ হয়। বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী রাত সাড়ে ৭টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা চলছে। এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কাল (মঙ্গলবার) হয়তো আবারও বৈঠক হতে পারে।’ তখন সব জানানো হবে বলে জানান তিনি।

বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে এ বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও রিয়াজ রহমান।

খালেদার সঙ্গে তারানকোর প্রথম বৈঠক : এর আগে শনিবার প্রথম দফা বৈঠক করেন তাঁরা। সেদিন সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার এ বৈঠক শেষ হয় রাত ৯টায়। সেখানে উপস্থিত দলের সবার সঙ্গে বৈঠকের পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে একান্তে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তারানকো। এর আগে একই দিন সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে বৈঠকের পরও তারানকো একান্তে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।

সেদিনও খালেদার সঙ্গে বৈঠকে কী কথাবার্তা হয়েছে সে ব্যাপারে মুখ খোলেননি বিএনপির নেতারা। বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ দু-একদিনের মধ্যে আবার আলোচনা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পূর্ণ আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে এ বৈঠকেও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও রিয়াজ রহমান।

তারানকো তাঁর এই সফরে যে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার মধ্যে দুজন জাতিসংঘের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্সের (ডিপিএ) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। অন্য দুজনের একজন ইলেক্ট্রোরাল অ্যাসিন্ট্যান্ট ডিভিশনের (ইএডি) পরিচালক এবং অপরজন জাতিসংঘেরই একজন মধ্যস্ততা বিশেষজ্ঞ।

ঢাকা জার্নাল, ডিসেম্বর ৯, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.