তাজমহল রক্ষায় এবার শ্মশান সরানোর নির্দেশ
দূষণের হাত থেকে ভালোবাসার প্রতীক আগ্রার তাজমহল রক্ষায় এবার ইউনেস্কো ঘোষিত এই বিশ্বঐতিহ্যের পাশ থেকে একটি শ্মশান সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্মশানটি সরানো সম্ভব না হলে সেখানে মৃতদেহ সৎকারে বিদ্যুতের চুল্লি বসাতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, শ্মশানে কাঠ দিয়ে মৃতদেহ পোড়ানোয় যে ধোঁয়া হয়, তাতে প্রভাবে ক্রমেই বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে সাদা মর্মর পাথরে গড়া তাজমহলের জৌলুস।
“শ্মশানে কাঠ পোড়ানোর ধোঁয়ায় মোগল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি অসামান্য এই সৌধের ক্ষতি হচ্ছে,” বলা হয়েছে আদালতের পর্যবেক্ষণে।
তাজমহলের সুরক্ষায় প্রায়ই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় কর্তৃপক্ষকে। সম্প্রতি আগ্রা শহরে বহু কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আগ্রাবাসী যাতে ডিজেলচালিত জেনারেটর না চালায়, সেজন্য শহরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এমনকি ঘুঁটে বা গোবর দিয়ে তৈরি জ্বালানি ব্যবহারও নিষিদ্ধ আগ্রায়।
এর আগে দীর্ঘদিনের বায়ুদূষণে হলদেটে হয়ে যাওয়া তাজমহলের দেয়াল নয় বছর কাদার প্রলেপে ঢেকে রাখার পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছিল।
অবশ্য ব্যস্ততম বাণিজ্যিক নগরী আগ্রায় কাঠ দিয়ে মৃতদেহ পোড়ানোর ধোঁয়ায় তাজমহলের ক্ষতি হচ্ছে, তা মানতে নারাজ শ্মশানের ব্যবস্থাপক সঞ্জয় সিং।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে তিনি বলছেন, “আমরা মৃতদেহ পোড়াতে ঘি, কর্পূর, চন্দনকাঠ এবং গোবর ব্যবহার করি। এসব ব্যবহার হলে বায়ু দূষণের সম্ভাবনা কম থাকে।”
মোগল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতি ধরে রাখতে এ সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন। ১৪তম সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় মমতাজের। ১৬৩২ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৬৪৮ সালে।
প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ পর্যটক শ্বাশত প্রেমের এই সমাধি দেখতে আগ্রা ভ্রমণ করেন।