তসলিমার পাশে বিচারপতি কাতজু
ঢাকা জার্নাল: তসলিমা নাসরিনের ভারত বাস নিয়ে যখন নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তখন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশটির প্রেস কাউন্সিলের প্রধান বিচারপতি মারকান্দে কাতজু। তিনি বলে দিয়েছেন, তসলিমা নাসরিনকে ভারতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হোক।
বাংলাদেশের এই বিতর্কিত নারীবাদি লেখক ১৯৯৪ সাল থেকে পরবাসে রয়েছেন। ভারত সরকার সবশেষ তার সেই দেশে বসবাসের জন্য ভিসার মেয়াদ মাত্র দুই মাস বাড়িয়েছে। তসলিমা নাসরিন অন্তত এক বছরের জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন।
একটি বিবৃতিতে বিচারপতি কাতজু বলেছেন, সংবাদপত্র পড়ে তিনে জেনেছেন তসলিমা নাসরিনের ভিসা মাত্র দুই মাস বাড়ানো হয়েছে।
‘আমার মতে তাকে ভারতে বসবাসের স্থায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত,’ বলেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এই বিচারপতি।
বিচারপতি কাতজু আরও বলেন, “তসলিমা নাসরিন তার ‘লজ্জা’ উপন্যাস লেখার পর একদল মৌলবাদী আর স্বার্থান্বেষী তার পেছনে লেগেছে। কিন্তু এই বইটি আমি পড়েছি, এতে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর বাংলাদেশে হিন্দু কমিউনিটির ওপর যে অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে কেবল তারই চিত্র ফুটে উঠেছে। এই বইয়ে ইসলামবিরোধী কিছুই নেই।”
৫১ বছর বয়সী লেখিকা তসলিমা নাসরিন ভারতে বসবাসের জন্য আবেদন করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাত্র দুই মাসের জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়ায়। এবং বিষয়টি আরও যাচাই বাছাইয়ের জন্য পাঠায়।
এতে তসলিমা নাসরিন হতাশা ব্যক্ত করেন। সিদ্ধান্তের পর টুইট করে তিনি এই হতাশার কথা জানান। তসলিমা বলেন, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমার কল্পনারও অতীত।
এতে তসলিমা আরও লিখেন তিনি অক্সফোর্ডে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যাচ্ছেন কিন্তু এরপর আর তার পক্ষে ভারত ফেরা সম্ভব হবে না।
এদিকে ভারতের নয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচক হলেও তসলিমা নাসরিনের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্তে তার সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে দেশটির মুসলিম ধর্মীয় নেতারা। তারা বলছে, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তই সঠিক, এবং দাবি করছে, তসলিমা নাসরিনকে যেনো তাদের দেশে আর ঢুকতে দেওয়া না হয়।
তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সালে দেশ থেকে ‘বিতাড়িত’ হলে তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ভারতে অবস্থান করছেন। এরমধ্যে সুইডেনের নাগরিকত্বও পেয়েছেন তিনি। তবে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন আলোচনায় তসলিমা নাসরিন ভারতে বিশেষ করে কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন।
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ০২, ২০১৪