শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু নিয়ে সংশয় মুহিতের

images (9)ঢাকা জার্নাল: দরপত্র আহবান করা হলেও ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে কী না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

বুধবার বিকেলে মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণের দরপত্র আহবান-এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে সন্ধ্যায় সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এ সংশয়ের কথা জানান।

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার যে টাইট শিডিউলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এতে করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যাদেশ দেয়া সম্ভব হবে কি নাÑ এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।”

মুহিত বলেন, “দরপত্র আহ্বান করেছি, আমরা কিছু কৌশলও নিয়েছি। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে কাজের অর্ডার দিতে পারবো কি না সন্দেহ আছে।”

মুহিত জানান, পরবর্তী সরকারও যাতে চালিয়ে যেতে পারে, সেই প্রস্তুতি থাকছে। তবে ঠিকাদাররা আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় পৃথক ব্যাংক একাউন্ট খোলা হবে এবং রিজার্ভ থেকে এ অর্থ পরিশোধ করা হবে।

তিনি বলেন, “এর ফলে আন্তর্জাতিক দরদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহ দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী হবে এবং তারা অংশ নেবে বলে আমি আশাবাদী।

মুহিত জানান, বর্তমানে রিজার্ভ প্রায় ১ হাজার ৫শ’ কোটি ডলার। রিজার্ভ থেকে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করা যাবে। পৃথক এ একাউন্টে ১২০ কোটি থেকে ১৪০ কোটি ডলার রাখা হবে উল্রেখ করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ইতোপূর্বে যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছিল, এবারের কেবল তাদেরই দরপত্র প্রদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, অন্য কাউকে নয়। কারণ তারা ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারবে না, অন্যদের সে অভিজ্ঞতাও নেই। সুতরাং আগামীতে যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের দ্বারাই পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হবে। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।”

দুর্নীতি ও সেতু নির্মাণে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণ নিয়ে বিরোধীদলের বক্তব্য প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, “আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অংশ নেয় এবং তাদের বিল পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায় সে কৌশল নেয়া হয়েছে। তবে দুর্নীতি ও লুটপাট তারাই করে গেছেন। এটি তাদেরই ধর্ম ছিল, এটা ছাড়া তারা অন্য কিছু চিন্তাই করতে পারেন না।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, “তাদের (বিএনপি) দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে, ওই সময় আন্তর্জাতিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা অফিস গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিল তা তাদের মনে থাকে না।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “অত্যন্ত ভালভাবে এ প্রকল্পটির কাজ আমরা শুরু করেছিলাম। সেটা প্রক্রিয়া বহাল থাকলে কাজটি আরো অনেক সহজ হতো। কিন্তু দুর্নীতি না হলেও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের একটি অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে তাদের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে নেয়। এটা ছিল আমাদের জন্য একটি অসম্মানজনক অবস্থান।”

“বিশ্বব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তার লোক দেখানো মনোভাবের কারণেই এটি হয়েছিল। এ প্রকল্পটি যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় এবং কোনো দুর্নীতি না হয় সেজন্য সরকার শুরু থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিল।”

অর্থমন্ত্রী জানান, সাধারণত এ ধরনের প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়ে থাকে। কিন্তু এ প্রকল্পে এ ধরনের একটি অভিযোগও আসেনি।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্যানেলের চূড়ান্ত নিয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, জবাব পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কোনো জবাব পাওয়া না গেলে ৩০ তারিখের পর এটি প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২৬, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.