কর্পোরেট

জুনে থ্রিজি চালু করছে ৪ টেলিকম কোম্পানী

3g-Lebanonঢাকা জার্নাল: আগামী জুনেই চালু হচ্ছে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) মোবাইল ফোন সার্ভিস৷ এই মুহূর্তে একমাত্র রাষ্ট্রায়াত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটক পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি সেবা শুরু করলেও, জুন থেকে একযোগে ৫টি অপারেটর এই সেবা শুরু করবে৷

গত ১৪ ও ২১শে মার্চ বেসরকারি পাঁচটি মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে থ্রিজির নিলাম নিয়ে প্রি-বিট বৈঠক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)৷ ওই সব বৈঠকে কিছু সুযোগ-সুবিধার বিষয় নিয়ে একমত হতে পারেনি বিটিআরসি ও অপারেটররা৷ তবে ১২ই মে থ্রিজির নিলামে অংশ নেয়ার দরখাস্ত জমা দেয়ার আগে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী বিটিআরসির কমিশনার আবদুস সামাদ৷

আবদুস সামাদ বলেন, নির্দিষ্ট সময়েই সব অপারেটররা যাতে নিলামে অংশ নেয় তার সব ব্যবস্থা বিটিআরসি কমিশন করবে৷

তবে সবগুলো মোবাইল ফোন অপারেটর থ্রিজির লাইসেন্স পাচ্ছেন না৷ রাষ্ট্রীয় অপারেটর হিসেবে টেলিটক গত ১৪ই অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে এই সেবা শুরু করেছে৷ আর বেসরকারি চারটি অপারেটরকে এই লাইসেন্স দেয়া হবে৷ এর মধ্যে আবার নতুন একটি অপারেটর থাকবে৷ ফলে বাংলাদেশে বিদ্যমান পাঁচটি বেসরকারি অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল ও সিটিসেলের মধ্যে চারটি অপারেটর এই লাইসেন্স পাবে৷

এসোসিয়েশন অব মোবাইল ফোন অপারেটরস (এমটব)-এর সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবীর বলেন, সরকার টুজির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেয়ার আশ্বাস দিয়েও পারে তা দেয়নি৷ এখন থ্রিজিতে কিছু আশ্বাস দিয়েছে৷ এগুলো শুধু মৌখিক হলে হবে না, দালিলিক কিছু থাকতে হবে৷ তাহলেই অপারেটররা থ্রিজির নিলামে অংশ নেবে৷ দুই দফায় বৈঠক করার পর, তাদের এ ব্যাপারে আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি৷
বেসরকারি অপারেটরদের থ্রিজি লাইসেন্স দেয়া জন্য ইতিমধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে৷ নিলামে আগ্রহীদের আগামী ১২ই মে’র মধ্যে দরখাস্ত জমা দিতে হবে৷ এ দরখাস্ত যাচাই-বাছাই করে ২০শে মে নিলামযোগ্য অপারেটরদের নাম ঘোষণা করার কথা রয়েছে৷

আগামী ৩০শে মে’র মধ্যে নির্বাচিত অপারেটরদের বিড আর্নেস্ট মানি হিসেবে ২ কোটি ডলার জমা দিতে হবে৷ আর চূড়ান্ত নিলামে অংশগ্রহণে যোগ্য অপারেটরদের নাম আগামী ৫ই জুন প্রকাশ করবে বিটিআরসি৷ এসব প্রক্রিয়ার পর আগামী ২৪শে জুন থ্রিজির চূড়ান্ত নিলাম অনুষ্ঠিত হবে৷
গ্রাহক সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশের প্রধান মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের চিফ কমিউনিকেশন অফিসার সৈয়দ তাহমিদ আজিজুল হক  বলেন, থ্রিজি লাইসেন্স দিলেই শুধু হবে না, এটি গ্রাহকবান্ধব যাতে হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে৷ লাইসেন্স নিতে অপারেটরদের অনেক বেশি টাকা দিতে হলে তার ভার গ্রাহকদের উপর পড়বে৷ তাই সেদিকে সরকার যাতে নজর দেয় তেমনি দাবি এই কর্মকর্তার৷
গত ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের তরঙ্গ মূল্য ২ কোটি ডলার নির্ধারণ করে থ্রিজি লাইসেন্স নীতিমালা চূড়ান্ত করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়৷ চূড়ান্ত নীতিমালায় বাংলাদেশের বেসরকারি পাঁচ মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে তিনটি এবং নতুন একটি অপারেটরকে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী টেলিটক নিলামে অংশ না নিলেও নিলামে যে দর উঠবে, সে পরিমাণ টাকা দিয়েই টেলিটককে লাইসেন্স নিতে হবে৷
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুজিবুর রহমান  বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটকের থ্রিজি নিয়ে কি করতে হবে তা সরকারই নির্ধারণ করে দেবে৷ আর পরীক্ষামূলক থ্রিজি সেবা চালু করে কেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকায় গ্রাহক সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেছে৷ ইতিমধ্যে চট্টগ্রামেও শুরু করা হয়েছে৷ এতে দারুণ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি৷ বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা থ্রিজিতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, টুজি লাইসেন্স নবায়নের জন্য সরকারকে দেয়া টাকার উপর ১৫ শতাংশ রিবেট সুবিধা দাবি করে আসছিল অপারেটররা৷ অর্থমন্ত্রী তাদের এই রিবেট সুবিধা দেয়া আশ্বাসও দিয়েছিলেন৷ সবশেষ গত ১৩ই মার্চ অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর রিবেট সুবিধা দেয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন৷ অবশ্য থ্রিজিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷ এই আশ্বাসই এখন লিখিতভাবে চাচ্ছে অপারেটররা৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.