Leadসংবাদ শিরোনাম

জাপার মন্ত্রীদের পদত্যাগ করার নির্দেশ এরশাদের

download (1)ঢাকা জার্নাল: নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার একদিনের মাথায় নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির ছয় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বুধবার বিকালে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নির্দেশের কথা জানান তিনি।

এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন কথা না বলেই গাড়িতে উঠে পড়েন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং।

বুধবার বিকেল সোয়া ৪টা থেকে ৪টা ৫০ পর্যন্ত এ বৈঠক হয়। এরপরই সুজাতা বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে চলে যান।

এরশাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাবার সময় সাংবাদিকরা ঘিরে ধরলেও সুজাতা কোন কথা না বলে গাড়িতে উঠে চলে যান।

বৈঠকের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “তিনি আমাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলেছিলেন। আমি তাকে বলেছি, আমি নির্বাচনে যাব না এটা সাফ কথা। সব দল নির্বাচনে না আসলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সরকার নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে।”

এ সময় এরশাদ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “তোমরা যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছ তারা প্রত্যাহার করে নাও। যারা নির্বাচনকালীন সরকারে যারা আছ, তাদেরও পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। আর সময় নেই। এ সরকারে থেকে আর কোন লাভ নেই। নির্বাচনের পরিবেশ নেই। মানুষ ভোট দিতে পারবে না।”

এ সময় এরশাদ আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, তাদের কোন জনপ্রিয়তাও নেই। ভোট হলে দুই ভাগ ভোটও পাবে না তারা। দেশে হাহাকার চলছে, মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে না।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনকালীন সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারাও এরশাদের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, খুব শিগগির আমরা পদত্যাগ করব।

এ অবস্থায় জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কোন ধরনের সমঝোতার করবে কীনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষুব্ধ এরশাদ বলেন, “কিসের সমঝোতা? সমঝোতা হচ্ছে একটি রাজনৈতিক কৌশল।”

গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে ‘হঠাৎ’ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না সাবেক এ সামরিক শাসকের। বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে সুজাতা সিং এরশাদের বাসভবন বারিধারার প্রেসিডিয়াম পার্কে আসেন। তার কিছু আগে এরশাদও ‘আত্মগোপন থেকে’ নিজ বাসায় ফেরেন।

“রাতে কোথায় ছিলেন?” সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন শুনেই মুচকি হেসে দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। তারপর বলেন, “বন্ধুর বাসায় ছিলাম।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আধাঘণ্টা পরেই এরশাদের বাসভবন ও গুলশান-বারিধারার ওই সড়কে ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়।

নির্বাচন নিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বুধবার সকালে নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় পৌঁছে সুজাতা প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

এদিক প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রবেশের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ছবি তুলতে বাধা দিলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ হাতাহাতি হয়।

পরবর্তীতে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঢাকা জার্নাল, ডিসেম্বর ৪, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.