Leadআন্তর্জাতিকসব সংবাদ

জাতিসংঘের পদক্ষেপে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত হবে : সু চি

ঢাকা জার্নাল: রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান আলোচনা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে মিয়ানমার।

সোমবার এক বিবৃতিতে ‘রাখাইনে আর যেন কোনো সহিংসতা না হয়, তা নিশ্চিত করতে এবং সেখানে সামরিক শক্তির অতিরিক্ত প্রয়োগ বন্ধ করতে’ মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এ ছাড়া রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হরণ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ওই বিবৃতির জবাবে বুধবার মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হলো, নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো পদক্ষেপে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিবৃতিতে সু চির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যে ইস্যুটি মোকাবিলা করছে, তা শুধু দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান হতে পারে। কিন্তু জাতিসংঘের বিবৃতিতে এ বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

সু চির বেসামরিক সরকার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। এর আগে জাতিসংঘ অভিযোগ করে, দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’ চালাচ্ছে। দমন-পীড়ন, নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বর অভিযান চালানোয় জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার আলোচনা শুরু করেছে দেশটি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও তাদের বিরুদ্ধে চাপ জারি রেখেছে।

এ অবস্থায় সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের উদ্দেশে বিবৃতি দেওয়ায় তাতে আপত্তি তুলেছেন সু চি। তার কার্যালয় বিবৃতিতে বলেছে, ‘মসৃণ ও দ্রুততার সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার যে প্রচেষ্টা চলছে, নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি তাতে অবসম্ভাবী ও মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা চলছে এবং আগামী ১৬-১৭ নভেম্বর মিয়ানমার সফরের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্ত্রীর মিয়ানমার সফর ওই তারিখের পরে হতে পারে।

গত সপ্তাহে অং সান সু চির মুখপাত্রের এক বক্তব্য বাংলাদেশের অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হুট করে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, লাখ লাখ ডলার আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়ার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের ফেরানো বিলম্বিত করতে পারে বাংলাদেশ।

এরপর গত রোববার ঢাকায় কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সংসদ সদস্যদের (সিপিএ) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের ওপর আরো বেশি আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান।

আগামী ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সফর করবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স অনলাইন

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৯, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.