চলে গেলেন কবি শহীদ কাদরী
ঢাকা জার্নাল: না ফেরার দেশে চলে গেলেন কবি শহীদ কাদরী। রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ জানান, রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় নিউইয়র্কের নর্থ শো’র বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি জানান, কবিপত্নী নীরা কাদরী তাকে এ তথ্য জানিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তার মরদেহ বাংলাদেশ আনা হবে। কবিপত্নী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফনের ইচ্ছা পোষণ করেছেন। বাংলাদেশে মরদেহ আসার পর তাকে শহীদ মিনারে জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মুহাম্মদ সামাদ।
তার মৃত্যুতে দেশের শিল্প-সাহিত্য জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শহীদ কাদরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
প্রবাসী কবি শহীদ কাদরী ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গার পর তার পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসেন। ১৪ বছর বয়সে শহীদ কাদেরীর প্রথম কবিতা ‘এই শীতে’ বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কাকতালীয়ভাবে সেদিনই তার মা মারা যান।
১৯৭১ সালে শহীদ কাদরী বিয়ে করেন পিয়ারীকে। সে সময়কার হিসেবে আধুনিক এ নারীর হাত ধরে ভাগ্যের অন্বেষণে ১৯৭৮ সালে পাড়ি দেন জার্মানিতে। পিয়ারীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি নতুনে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তার ভক্ত নীরাকে।
শহীদ কাদরীর চারটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো ‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ এবং ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’। তিনি ২০১১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, মাযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন।
ঢাকা জার্নাল, আগষ্ট ২৯, ২০১৬।