ঢাকাসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

গৃহকর্মী পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

makeঢাকা জার্নাল: রংপুরে শিশু গৃহকর্মী পুর্নিমা রানী রায়কে (১২) আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বাড়ির মালিক। অগ্নিদগ্ধ শিশুটিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে। শনিবার মামলা হলে পুলিশ বাড়ির মালিক সুধির চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী পপি রানী সাহাকে গ্রেফতার করে।

পূর্নিমার বরাত দিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম জানান, রংপুর নগরীর মুলাটোল এলাকার সুধির চন্দ্র সাহার বাড়িতে কাজ করত পুর্নিমা রানী। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লোহানি কচুয়া গ্রামের রিকসাচালক প্রভাত চন্দ্র রায়ের মেয়ে পুর্নিমাকে বাড়িতে কাজের জন্য প্রায় এক মাস আগে সুধির নিয়ে আসে। এরপর কারণে অকারণে সুধির ও তার স্ত্রী পপি রানী সাহা মেয়েটিকে নির্যাতন করত। তিন বেলা পেটভরে খাবারের জন্য মেয়েটি এসব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করত। শুক্রবার রাতে চুরি করে খাবার অপবাদ দিয়ে পুর্নিমাকে মারধর করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় পপি রানী সাহা ও তার স্বামী। এতে মেয়েটির দু হাত ও গলা থেকে কোমর পর্যন্ত পুড়ে যায়। মেয়েটির চিৎকার যাতে কেউ শুনতে না পারে সেজন্য ঘরের মধ্যে বন্ধ করে রাখে। এরপর অবস্থার অবনতি হলে কৌশলে পাগলাপীর এলাকায় নিয়ে গিয়ে একটি গোডাউনে মেয়েটিকে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে করে মেয়েটির শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকে। এলাকার লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে এবং গৃহকর্তা সুধির চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী পপি রানী সাহাকে গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার এসআই মোস্তাফিজার রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

পুর্নিমা রানী রায় জানায়, সারা দিন-রাত তাকে কাজ করতে হত। এরপরও তাকে ঠিকভাবে খাবার দেওয়া হত না। কাজ একটু ভুল হলেই মারধর করত। ভালভাবে ঘুমাতে দিত না। ঘুম থেকে দেরিতে উঠলেই বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রী লাঠি দিয়ে মারপিট করত। শুক্রবার খাবার চুরির অপবাদ দিয়ে ওরা দুজনে তাকে মারপিট করে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুর্নিমা নির্যাতনকারীদের ফাঁসি দাবি করে।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট প্রধান ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, শিশু মেয়েটির হাত ও গলা থেকে কোমর পর্যন্ত ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। ২৪ ঘন্টা পার না হলে কিছু বলা যাচ্ছে না।

পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি অমানবিক। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

ঢাকা জার্নাল,২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.