শিক্ষা-সংস্কৃতি

গার্লস স্কুলে চান্স পেলো ছাত্র

খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় একই ছাত্রী ৯ বার উত্তীর্ণ হয়েছে। এদিকে, যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে এক ছাত্র। এটাকে এক ধরনের প্রতারণা বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লটারির ফল প্রকাশের পর বিষয়টি প্রকাশ পায়।

সূত্রমতে, খুলনা বিভাগের ১১টিসহ দেশের ৫৫৫টি সরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় সোমবার বিকাল ৫টায়। লটারির মাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, মাত্র দুটি ছবি ব্যবহার করে এক ছাত্রী করোনেশন বিদ্যালয়ের প্রাতঃশাখায় আট বার এবং দিবা শাখায় এক বারসহ মোট ৯ বার চান্স পেয়েছে। তার নাম ভিন্ন ভিন্ন হলেও পিতার নাম অনিরুদ্ধ সরদার ও মায়ের নাম নিপা রায়। ফলাফলের তালিকায় ওই ছাত্রীর নাম উল্লেখ রয়েছে- অনিন্দিতা সরদার আঁখি, অংকিতা সরদার নির্ঝর, অংকিতা সরদার। জন্ম নিবন্ধন নম্বরও ভিন্ন ভিন্ন। বিদ্যালয়ের প্রাতঃশাখার ফলাফল শিটে ওই ছাত্রীর সিরিয়াল নম্বর ১৯, ৩২, ৩৭, ৮১, ৮২, ৯০, ৯৩ ও ১০৮ নম্বর এবং দিবা শাখার সিরিয়াল নম্বর ২৫।

বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে দুটি। একটি নম্বর বন্ধ পাওয়া গেলে অপরটিতে কল করলে রিসিভকারীর নাম নিপা বললেও তার মেয়ে করোনেশন বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে বলে জানান। তবে তার মোবাইল নম্বর কীভাবে ভর্তি ফরমে এলো এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

স্কুল গেটে ফলাফল টানানোর পর বিষয়টি নজরে এলে অভিভাবকরা বলেন, এটা এক ধরনের প্রতারণা। এর ফলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো।

খুলনার জেলা প্রশাসক ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ফারহানা নাজ বলেন, এটি একটি বাজে দৃষ্টান্ত হলো। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সরকারি করোনেশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকামী মাকসুদা জানান, বিষয়টি মিটিংয়ে জেলা প্রশাসককে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এ ছাড়া এটি তিনি ১৩ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককেও জানাবেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল শিটে দেখা গেছে এক ছাত্রের নাম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬০ জন শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশিত হলেও ৫৫ নম্বর সিরিয়ালে আব্দুল আহাদের নাম প্রকাশিত হয়। আব্দুল আহাদ পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের পুত্র। সে প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।

গার্লস স্কুলে চান্স পাওয়া আব্দুল আহাদ জানায়, সে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান মাসুদের মাধ্যমে মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে। কিন্তু তার নাম এসেছে মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে।

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবীর হোসেন পলাশ জানান, কম্পিউটারে ভুল হতে পারে। তিনি তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।