গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, প্রাণ গেল ২৫ জনের
ঢাকা জার্নাল : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গাছের সঙ্গে যাত্রীবাহী একটি বাসের ধাক্কা লাগার ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৮ জন। বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার কৈডুবি এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১০ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন সূর্য বেগম (৭০), মো. আফজাল (৪৮), হেলাল (৪০), মনিরুল ইসলাম (৩৫), আসমা বেগম (২৭), রেজাউল (২৩), শফিকুল ভূঁইয়া (২২), শাহীন সিকদার (২০), আকলিমা বেগম ও আমেনা। আহত ব্যক্তিদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনাস্থল এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়ার ভাষ্য, গভীর রাতে প্রচণ্ড শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস ও হতাহত যাত্রীদের দেখতে পান। ঘটনাস্থলে নিহত হন ১৯ জন। আহত হয়েছেন ২২ জন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার শিকার বাসটির নাম ‘সোনার তরী পরিবহন’। বাসে থাকা যাত্রীদের ভাষ্য, বাসটি বুথবার রাত আটটার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে রওনা দিয়ে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া যাচ্ছিল। দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার কৈডুবি এলাকায় বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এতে বাসটি সড়কের পাশে থাকা একটি রেইনট্রি গাছের সঙ্গে প্রচণ্ড ধাক্কা খায়। বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।
ঘটনার পর এলাকার লোকজন ও পার্শ্ববর্তী একটি আনসার ক্যাম্পের সদস্যরা গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে ভাঙ্গা ও ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও যোগ দেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রী রুবি আক্তার বলেন, গাবতলী থেকে ছাড়ার পর থেকেই বাসটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। যাত্রীরা সতর্ক করলেও চালক শোনেননি।
হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর অঞ্চলের সহকারী সুপার বেলাল হোসেন বলেন, বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত রোগীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হবে। দাফনের জন্য প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোজাম্মেল হোসেনের ভাষ্য, তাঁদের কাছে ২২ জনের লাশ এসেছে। এসব লাশ স্বজনদের কাছে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ৯, ২০১৫।