Leadসংবাদ শিরোনাম

গম নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ ২৬ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত

ঢাকা জার্নাল: ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি। একসঙ্গে আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ২৬ জুলাই এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুরে এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত। এর আগে আবেদনটি দায়ের করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

বুধবার (৮ জুলাই) এক রিটের আদেশে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম কাউকে জোর করে দেওয়া যাবে না এবং কেউ ফেরত দিতে চাইলে সরকারকে তা ফেরত নেওয়ার আদেশ দেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের মান নিয়ে অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ জুন তদন্ত চেয়ে রিটটি করেন আইনজীবী পাভেল মিয়া।

রিট আবেদনে গম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত খাদ্য অধিদফতরের প্রতিবেদন তলব করেন। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার (০৫ জুলাই) গম খাবারের উপযোগী দাবি করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেয় খাদ্য অধিদফতর।

সে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘খাদ্য অধিদফতরের পরীক্ষাগারসহ বিভিন্ন পরীক্ষাগার থেকে প্রাপ্ত সব রিপোর্ট মোতাবেক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ব্রাজিল থেকে আমদানিকৃত আলোচ্য গম চুক্তিপত্রে উল্লিখিত বিনির্দেশ মোতাবেক গ্রহণীয় সীমার মধ্যে থাকায় মানুষের খাওয়ার উপযোগী বলে প্রত্যয়ন করা হলো।’

আদেশের পর রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, খাওয়ার উপযোগী বললেও গমে কীট থাকার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই, আদালত কাউকে জোর করে গম সরবরাহ করতে নিষেধ করেছেন এবং সরবরাহকৃত গম কেউ ফেরত দিতে চাইলে সরকার নিতে বাধ্য থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন।

গম নিয়ে পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের মান নিয়ে খাদ্য অধিদফতর থেকে আপত্তি তোলা হয়েছিল। ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো বিভাগ এর মান নিয়ে কোনো সনদ দেয়নি। বন্দরে অবস্থানকারী খাদ্য অধিদফতরের রসায়নবিদেরা এই গমের বেশ কয়েকটি চালানকে ‘বি’ ক্যাটাগরির বা মাঝারি থেকে নিম্নমানের হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন’।

‘এসব জেনেও খাদ্য অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালক সারোয়ার খান চট্টগ্রাম বন্দরে আসা ওই গমের ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন। অধিদফতরের আমদানি সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত, চিঠি ও পর্যালোচনা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে’।

‘এই গম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রেশন হিসেবে সরবরাহের পর এর মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুলিশের সব বিভাগীয় কার্যালয় এই গমকে নিম্নমানের এবং খাওয়ার অযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করে একাধিকবার চিঠি দেয়। তারপরও খাদ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই বার বার বলছে, এই গম অখাদ্য নয়। খাদ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যেও তাই বলেছেন। গত বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই কথা বলেছে।’

‘ব্রাজিল থেকে গম নিয়ে ‘এমভি স্যাম উলভ’ নামে একটি জাহাজ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে এলে বন্দর কর্তৃপক্ষ চুক্তি অনুযায়ী অনুমতিপত্র ও নথি দেখতে চায়। তৎকালীন মহাপরিচালক ওই গম খালাসের জন্য অনুমতি দিতে বললে খাদ্য অধিদফতরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক লিখিতভাবে বলেন, ‘ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয় ও বণিক সমিতি রফতানিকৃত গমের নিশ্চয়তাপত্র দেয় না। তাই, এই গম খালাস করার সুযোগ না দেওয়ার পক্ষে মত দেন তিনি’।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ০৯, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.