গভর্নরের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ
ঢাকা জার্নাল: যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিবি গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সোমবার (১৪ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঘটনাটি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকায় গভর্নরের ওপর ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি। তবে বিবি গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নাম উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী আবদুল মাল আবদুল মুহিত হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে উচ্চস্বরে প্রধানমন্ত্রীকে বলে ওঠেন, ‘বিষয়টি আমাকেও জানানো হয়নি। এমনকি গত ৭ মার্চের বৈঠকেও (কী বৈঠক তা জানা যায়নি) আমাকে কিছু বলা হয়নি।’
‘এতো বড় ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীকে না জানিয়ে থাকে কীভাবে?,’ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এমএ মুহিত।
এ সময় পাশ থেকে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অর্থমন্ত্রীর পাঞ্জাবীর প্রশংসা করলে প্রসঙ্গটি নিয়ে আর কোনো কথা হয়নি। ক্ষুব্দ অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ এই পাঞ্জাবীতে আপনাকে খুবই সুন্দর লাগছে।’
তার সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও অর্থমন্ত্রীর পাঞ্জাবীর প্রসংশা করেন। এরপর ক্ষুব্দ অর্থমন্ত্রী সহাস্যে তাদের ধন্যবাদ জানান।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে গর্ভনরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি প্রধানমন্ত্রী শুনেছেন, তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত বাংলাদেশের স্থিতি থেকে হ্যাক করে অর্থ চুরি করা হয়েছে।
এর একটি অংশ গেছে শ্রীলঙ্কায়, আরেকটি অংশ গেছে ফিলিপাইনে। সম্প্রতি ফিলিপাইনের একটি ইংরেজি দৈনিকে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইনে পাচার হওয়ার কথাও উল্লেখ ছিল।
গত ৭ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, মোট ৮০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার চুরি করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায়।
তবে এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়। তবে চুরি যাওয়া অর্থের বড় অংশই উদ্ধার করা যায়নি।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা করছেন, এ অর্থ উদ্ধার সম্ভব। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় চেষ্টা চলছে।
ঢাকা জার্নাল, মার্চ ১৪, ২০১৬।