Leadআন্তর্জাতিক

কুমিরও গাছে ওঠে

ঢাকা জার্নাল : একদা এক জঙ্গলে এক বুদ্ধিমান হরিণ বাস করিতো। সে যখন নদীর ধারে ঘাস খাইতো, তখন শুধু বাঘের ভয়ে ডাঙ্গার দিকেই নজর রাখিতো না, বরং কুমিরের ভয়ে নদীর দিকেও একটা চোখ দিয়া রাখিতো। কিন্তু একদিন নদীর ধারে গাছের নিচে ঘাস খাইবার সময় গাছ হইতে হঠাৎ এক কুমির নামিয়া আসিয়া তাহাকে শিকার করিলো।

গল্পটি পড়ে অবাক হচ্ছেন, ভাবছেন গাঁজাখূরি গপ্পো, গাছ থেকে আবার কুমির নামে নাকি!

কিন্তু বিষয়টি আজব হলেও গুজব নয়। গবেষণ‍ায় প্রমাণ হয়েছে কুমির শুধু পানিতেই বিচরণ করতে পারঙ্গম নয়, গাছে চড়তেও ওস্তাদ। তাই বনবাদাড়ে কুমিরের এলাকায় গেলে এখন থেকে নিকটবর্তী গাছের দিকেও নজর রাখতে ভুলবেন না!

কারণ যথন তখন গাছ থেকেও গায়ের ওপর এসে পড়তে পারে কুমিরের হিংস্র থাবা! থুক্কু থোতা! (কুমিরের থাবার থেকে থোতাই বেশি কার্যকর কি না!)

ইউনিভার্সিটি অব টেনেসির গবেষেক ভ্লাদিমির ডিনেট সম্প্রতি কুমিরের এই গাছে চড়ার অভ্যেসের ওপর ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ করেন। ভ্লাদিমির বলেন, সাধারণত কুমিরের শারীরিক বৈশিষ্ট্য দেখে মনে হয় না এগুলো গাছে চড়তে পারে। কিন্তু তারা এমনকি গাছের মগডালেও চড়ে বসতে পারে।

এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের জন্য গবেষণা চালানো হয় অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা এবং উত্তর আমেরিকায় বসবাস করা কুমিরের বিভিন্ন প্রজাতির ওপর।

গবেষণায় দেখা গেছে, কুমিরগুলো সহজেই গাছের ছয় ফুট পর্যন্ত চড়ে বসতে পারে। তবে ডিনেটস বলেন তিনি স্থানীয় অনেকের কাছেই শুনেছেন যে, কিছু কিছু কুমির এমনকি গাছের ৩০ ফুট পর্যন্ত উপরে চড়ে বসতে পারে।

গবেষকদের ধারণা, নিজেদের এলাকা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পেতে এবং সূর্যের আলোতে নিজেদের গরম রাখতেই গাছে চড়ে কুমির।

কুমিরের আশপাশে বসবাসকারী মানুষ অনেক আগে থেকেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আসছে বলে জানান ডিনেটস। তবে তাদের গাছে চড়ার অভ্যাসের ব্যাপারটি এই প্রথম কোনো গবেষণায় উঠে এলো।

ঢাকা জার্নাল, ফব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.