ঢাকাসারাদেশ

কালিয়াকৈরের শ্রমিক আন্দোলন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক

ঢাকা জার্নাল ডেস্ক: সেলিম রানা, গাজীপুর

গাজীপুরের একটি কারখানায় গত তিন দিনের টানা শ্রমিক আন্দোলন সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শেষ হয়েছে। ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শুক্রবার থেকে ধীরে ধীরে তীব্র রূপ নিতে থাকে। শ্রমিকদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল প্রোডাকশন বোনাস, হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিল, কাজের মজুরি বৃদ্ধি এবং ছুটির দিনে কাজ করলে আলাদা বোনাস দেওয়া।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ শুরু করে। এরপরে শুক্রবার থেকে আন্দোলন সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে। কারখানার হেড অফ অপারেশন এন কে সানজিনাইওয়ালা শ্রমিকদের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করেও কোনো সমাধান আসেনি।

অবশেষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শ্রমিকরা ভাংচুর শুরু করে এবং এক পর্যায়ে কারখানার হেড অফ অপারেশনকে আক্রমণ করে। তাকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হলে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কারখানার চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

রোববার সকাল থেকে শ্রমিকরা পুনরায় কারখানায় প্রবেশ করে আন্দোলন চালিয়ে যায়। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ এবং কারখানার এমডি কাজী আরহাফ উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আহ্বানের পরও কিছু শ্রমিক নতুন দাবি তুলতে থাকে এবং কর্মবিরতি চালিয়ে যায়। অন্যদিকে, আন্দোলনে যোগ না দেওয়ায় কিছু শ্রমিকদের উপর হামলা চালানো হয়। এই সংঘর্ষে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মৌচাক স্কাউট জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প এবং সাভার সেনানিবাস থেকে প্রায় শতাধিক সেনা সদস্য ঘটনাস্থলে আসে। তাদের হস্তক্ষেপে এক ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।