কার্ড জালিয়াতির মূল হোতা পিটার গ্রেফতার
ঢাকা জার্নাল: এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির প্রধান হোতা থমাস পিটারকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে লন্ডনের একটি সূত্র থেকে এটিএম কার্ড জালিয়াতির বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। এরপর এক ঘণ্টার মধ্যে থমাস পিটারের ছবিসহ তার গুলশানের ভাড়া বাসার ঠিকানাও আসে গোয়ন্দাদের হাতে। এতে পিটারের অতীত কর্মকাণ্ডের নানা বর্ণনাও ছিল। এসব তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানের ঠিকানায় গিয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর পিটারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়। রাতে অভিযান চালাতে পুরো এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করে ডিবি পুলিশ। পরে ওই ফ্ল্যাট থেকে থমাস পিটারকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটিএম কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন পিটার।
গ্রেফতারের পর পিটার গোয়েন্দাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের গ্রাহকদের টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ছিল আমার একটি ভুল সিদ্ধান্ত। চার বছর ধরে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে বাংলাদেশে বসেই শত শত বিদেশি গ্রাহকের টাকা তুলে নিয়েছি। কিন্তু এত দিন ধরা পড়িনি। আমাকে কেউ শনাক্ত করতে পারেনি এবং আমি নিজেও জানতাম আমাকে সহজে কারো শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। ধরা না পড়ার বিষয়ে আমার যথেষ্ট প্রযুক্তিগত সাপোর্ট ছিল। কিন্তু বেশি লোভ করতে গিয়ে আমি তোমাদের এখানকার টাকায় হাত দিয়েছি। এটা আমার উচিত হয়নি। আমি সত্যিই গভীরভাবে অনুতপ্ত। আমি সব সত্য বলে দেব। কিন্তু ওরা বড় শক্তিশালী, আমাকে মেরে ফেলবে। তাই তোমরা আমাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ো।’
পিটার জানান, লন্ডনের হ্যাম্পশায়ারে একটি রেস্টুরেন্টে তাদের নিয়মিত আড্ডা রয়েছে। আর যে তিনজন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন তারা মূলত রোমানিয়া ও স্পেনের বার্সেলোনার বাসিন্দা। এ ছাড়া লন্ডনপ্রবাসী একজন বাংলাদেশি নাগরিকের সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে। তার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়।
তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকায় স্বাভাবিক চলাফেরার সময় তিনি মাথায় ক্যাপ পরতেন না। তবে এটিএম বুথে ঢুকে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে যখন গ্রাহকের টাকা তুলতেন তখন নিজের চেহারা আড়াল করতে মাথায় ক্যাপ পরতেন। বাংলাদেশে এসেছেন চার বছর আগে। এক বছর আগে তিনি এখানে বাংলাদেশি মেয়ে মেরিনাকে বিয়ে করেন।’
জানা গেছে, থমাস পিটার আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িত। রাশিয়া, ইউক্রেন ও পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছে তার বহু সহযোগী। বাংলাদেশে বসেই আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। কয়েকটি দেশের পুলিশের তালিকায় পিটার আন্তর্জাতিক অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত। প্রথম এক বছর বাংলাদেশে ব্যবসায়ী হিসেবে ভিসা নিয়ে বাস করেন।
ঢাকা জার্নাল,২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।