শিক্ষা-সংস্কৃতি

‘একীভূত শিক্ষা কৌশল’ শিখবেন প্রাথমিকের ১০ হাজার শিক্ষক

‘সবাই মিলে শিখি’ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের শিখন-শেখানো ও মূল্যায়নে একীভূত শিক্ষা কৌশল শিখবেন দেশের ৩৬টি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক। প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীসহ সবার জন্য ‘একীভূত বা সমন্বিত শিক্ষা’র জন্য যৌথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর যৌথভাবে ‘বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন এবং প্রতিবন্ধিতা’ (সেন্ড) ফ্রেমওয়ার্কটি বাস্তবায়ন করছে।

বুধবার (২৬ জুলাই) কুড়িগ্রামে ‘সবাই মিলে শিখি’ প্রকল্পের দ্বিতীয় ব্যাচের পাঁচ দিনব্যাপী ‘একীভূতকরণের কৌশল: শিখন-শেখানো এবং মূল্যায়ন প্রশিক্ষণ’-এর সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিদ্যালয়ে একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধীসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে ইউএসএআইডি’র ‘সবাই মিলে শিখি’ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় গত বছর। প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের ‘চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪)’ সেন্ড ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে জানায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

সমাপনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. তারেক আহসান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. উত্তম কুমার দাশ, অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর সোনিয়া রেনল্ডস-কুপার ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবকে মাথায় রেখে সকল শ্রেণির পাঠ্যক্রমকে আধুনিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়কেও গুরুত্ব দিয়েছেন এবং অন্য যেকোনো সময় থেকে বর্তমানে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে। ইউএসএআইডি’র সবাই মিলে শিখি প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি উপজেলার ৫ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষকদের একীভূতকরণের কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ পাবে শুনে আমি আরও বেশি আনন্দিত। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই মমতাময়ী মায়ের ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন এই শিশুরা সঠিক নির্দেশনা ও যত্ন পেলে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ ও জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।’

ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর সোনিয়া রেনল্ডস-কুপার বলেন, ইউএসএআইডি সকল শিশুর জন্য নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য পাঠ্যপরিবেশ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। পাঁচ বছর চলমান এই প্রকল্প রংপুর, খুলনা এবং ঢাকা বিভাগের ৫ হাজারের বেশি প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ইতোমধ্যে দুটি ব্যাচের মাস্টার ট্রেইনিং সম্পন্ন হয়েছে এবং আরেকটি ব্যাচের প্রশিক্ষণ দ্রুতই শুরু হবে।

অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রকল্পের চিফ অফ পার্টি সাঈদা আনিস জানান, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, তাদের বাবা ও মা, এলাকাবাসী যে ধরনের প্রকল্পের আওতায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, তাদের মা-বাবা ও এলাকাবাসী যে ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন তা সমাধানে উপযুক্ত বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি সংস্থার মধ্যে বিদ্যমান সেতুবন্ধনটি আরও মজবুত করার কাজ করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন ‘সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-৪ এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানের সর্বোচ্চ উন্নযন। সরকারের এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে বেসরকারি সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’