এই ভ্যালেন্টাইন’স-এ প্রেমিককে কিডনি উপহার
ঢাকা জার্নাল : ভ্যালেন্টাইন’স ডে-তে ভালবাসার মানুষকে উপহারের তালিকায় কী কী রাখা যায় বলুনতো? পুতুল, ঘড়ি, জামা, বই…তালিকাটাতো আসলে বেশ লম্বা। আচ্ছা, তালিকায় কি জীবনের নামটা ভেবেছিলেন কখনও? না, শুধু মুখের কথায় প্রাণ দেওয়া নয়, এই প্রেম দিবসে সত্যি সত্যি ভালবেসে প্রেমিককে জীবন উপহার দিচ্ছেন প্রেমিকা।
জ্যাক সিমার্ড আর মিশেল লা ব্রাঞ্চ। পেশায় গল্ফার এই দু’জনের দেখাটা হয়েছিল গত বছর। ম্যাঞ্চেস্টারের এক গলফের ময়দানে। প্রথম দর্শনেই প্রেম। তারপর থেকেই একেবারে পারফেক্ট জুটি জ্যাক আর মিশেল।
কিছু দিন আগেই মিশেল জানতে পারেন কিডনির দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন জ্যাক। মাসে তিনবার ডায়ালিসিস করতে হয় তাঁকে। তবে কিছু দিনের মধ্যে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট না করলে আর হয়ত তাঁকে বাঁচানো যাবে না। হঠাত্ এই খবরে ঘাবরে যান মিশেল। আরও ভেঙে পড়েন যখন জানতে পারেন ১৯ বছর আগে তাঁর প্রেমিকের একটা কিডনি আগেই ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছিল।
প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে জলদি সামলে ওঠেন। ঠিক করেন হার মানবেন না কিছুতেই। নিজের থেকে এভাবে জ্যাককে দূরে যেতে দেবেন না ।
জ্যাককে না জানিয়েই মিশেল ছোটেন ডাক্তারের কাছে। জানান, জ্যাককে কিডনিটা তিনিই ডোনেট করতে চান। কিডনিটা তিনি আদৌ দিতে পারবেন কিনা, জানতে করিয়ে ফেলেন প্রয়োজনীয় টেস্টগুলোও।অদ্ভুতভাবে, সব পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হয়ে যান তিনি।ডাক্তার জানান এ কোনও মিরাকেলের থেকে কম নয়। অভিন্ন হৃদয় জ্যাক আর মিশেলের কিডনিও প্রায় আইডেন্টিকাল। হয়ত, ভালবাসার অমোঘ টানেই মিল খুঁজে নেয় তাদের রক্তের গ্রুপও।
ডাক্তারের সঙ্গে সব কিছু ঠিকঠাক করার পর নিজের সিদ্ধান্তের কথা জ্যাককে জানান মিশেল। প্রথম প্রথম কিছুতেই রাজি হতে চাননি জ্যাক। কিন্তু, মিশেল তাঁকে বলেন, জ্যাকই তাঁর ভবিষ্যত।জ্যাকের শরীরে তাঁর কোনও অংশের পাকাপাকি অবস্থান, আসলে অনাবিল আনন্দ দেবে মিশেলকেই।
এরপরে আর না বলতে পারেননি জ্যাক।রাজি হয়ে যান প্রেমিকার প্রস্তাবে।
তাই এবারের ভ্যালেন্টাইনে কিডনির আড়ালে প্রেমিককে আসলে জীবনটাই উপহার দিচ্ছেন মিশেল, সঙ্গে দিচ্ছেন না বলা সীমাহীন ভালবাসা, যার তুলনা এখন শুধু তিনিই।
রিপার্ট আনন্দবাজার পত্রিকা।
ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬।