এইচএসসি পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে সেট নির্ধারণ
ঢাকা জার্নাল: আগামী ২ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে সব সেট প্রশ্নপত্রই পরীক্ষা কেন্দ্রে নেওয়া হবে। কোন সেটে পরীক্ষা নেওয়া হবে তা ঠিক করা হবে শুরুর ২৫ মিনিট আগে। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট সিলগালা করা হবে না, প্যাকেটে সিকিউররিটি টেপ লাগানো থাকবে। আর আগের এসএসসি পরীক্ষার মতোই এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে নিজ আসনে বসতে হবে পরীক্ষার্থীকে।
রবিবার (২৫ মার্চ) প্রশ্নফাঁস ও ফাঁসের গুজবমুক্ত সুষ্টভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত্র বৈঠকে এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাবের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিত ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) ড. অরুণা বিশ্বাস, অতিরিক্ত (কলেজ) ড. মোল্লা জালালউদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ১০টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা প্রতিনিধি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘আমরা অতীতের মতো এবারও জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করেছি যাতে, সুষ্ঠ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রথমবারের মতো নতুন ব্যবস্থা প্রত্যেক সেটের জন্য আলাদা প্যাকেট থাকবে। প্রতিটি সেটই কেন্দ্রে যাবে। বিজি প্রেস থেকে কেন্দ্রে বা থানায় প্রশ্নপত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে যারা নির্ধারিত দায়িত্বে রয়েছেন তারাই থাকবেন। নিজের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিতে পারবেন না। অনিবর্য কারণে যদি কেউ না থাকনে তাহলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ যিনি দায়িত্ব দেন তিনিই অন্য কাউকে দায়িত্ব দেবেন। ট্রেজারি বা থানা থেকে কেন্দ্রে সব প্রশ্নপত্র পৌঁছানো হবে। কেন্দ্রে নির্ধারিত দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারাই প্রশ্নপত্র খুলবেন। প্রত্যেক প্যাকেট সিকিউরিটি টেপ দিয়ে আটকানো থাকবে। কোন অবস্থাতেই কেউ খুললে তা জানা যাবে। কেন্দ্রে যে তিন জনের দায়িত্ব রয়েছে তারা ছাড়া কেউ সেখানে যেতে পারবেন না। এসব বিষয় আমরা নিশ্চিত করেছি। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে সেট খোলা হবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড লটারির মাধ্যমে সেট নির্ধারণ করে ২৫ মিনিট আগে জানাবেন। ত্রিশ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে তার সিটে বসতে হবে। তার পর যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে পরীক্ষার ওপর কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ তখন পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে থাকবে।’
আগের পরীক্ষায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয় উল্লেখ করে সচিব জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের ১৪৪ ধারা জারি করা এলাকায় কাউকে মোবাইল ফোনসহ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধুমাত্র কেন্দ্রসচিবের কাঠে স্মার্ট নয় এমন ফোন থাকবে জরুরি যোগাযোগের জন্য।
পরীক্ষার এসব আইন মানার ব্যাপারে সচিব বলেন, ‘আমরা কোনভাবেই কাউকে প্রশ্রয় দেবো না।’
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও ফাঁসের গুজবমুক্ত সুষ্টভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত্র বৈঠকে যে সাতটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে-
- সব সেট প্রশ্পত্রই যাবে কেন্দ্রে। প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র সেটের জন্য একটি খাম ব্যবহার করা হবে। সিলগালা নয়, খাম থাকবে সিকিউটিরি টেপ দিয়ে আটকানো। জেলা প্রশাসকরা পরীক্ষা শুরুর আগে যেকোনো দিন ট্রেজারিতে এই কাজ সম্পন্ন করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার/নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সিকিউরিটি টেপ লাগাতে হবে।
- প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। ট্রেজারি বা থানা থেকে কেন্দ্রসচিবসহ পুলিশের পাহারায় কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছাতে হবে। সেটকোট পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী নির্ধারিত সেটকোডে পরীক্ষা নিতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, কেন্দ্রসচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে পবেশ করে আসনে বসতে হবে।
- কেন্দ্রসচিব ছাড়া কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইজ ব্যবহার করতে পারবেন না, তা নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রসচিব শুধু একটি সাধারণ মোবাইল (ছবি তোলা যাবে না এমন) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
- অনির্য কারণে কেউ পরীক্ষা শুরুর করতে দেরি হলে কেন্দ্রসচিব পরীক্ষা শুরুর সময় থেকে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পরীক্ষা নিবেন।
ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৭, ২০১৮।