শিক্ষা-সংস্কৃতি

এইচএসসি পরীক্ষার খাতা উধাও, ২ কলেজ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত

গাজীপুরের টঙ্গীতে এইচএসসি পরীক্ষারকেন্দ্র থেকে পরীক্ষার্থীর খাতা উধাওয়ের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই কলেজশিক্ষক আতিয়ার রহমান ও মনিরা খাতুনকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনাটি তদন্ত করতে টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের অভিভাবক সদস্য এম এ সাত্তার মোল্লাকে প্রধান করে শিক্ষক আবু জাফর ও কামাল হোসেনকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। শিক্ষা বোর্ডকে হল সুপার বিষয়টি জানিয়েছেন। কলেজশিক্ষক আতিয়ার রহমান ও মনিরা খাতুনকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।’

পরীক্ষারকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, টঙ্গী সাহাজ উদ্দিন সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ইমন। গতকাল বৃহস্পতিবার রসায়ন দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ওই কেন্দ্রে থাকা সব পরীক্ষার্থী খাতা জমা দিয়ে বেরিয়ে যান। পরে খাতা গণনায় দেখা যায় একটি খাতা কম, ইমনের খাতা নেই। পরে ইমনকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ডেকে আনা হয়। এ সময় পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ওই পরীক্ষার্থীকে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করে। ইমনের কলেজের শিক্ষকেরা কেন্দ্রে গিয়ে তাকে নিয়ে আসেন।

পরীক্ষার্থী ইমন বলেন, ‘আমি পরীক্ষা শেষে খাতা জমা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে যাই। সহপাঠীদের দিয়ে আমাকে খবর পাঠানো হয়। আমাকে আবার পরীক্ষা দিতে বলেছে।’

টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মোট ৭৮০ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষা শেষে ৭৭৯টি খাতা পাওয়া যায়। পরে বাবা-মাসহ ওই পরীক্ষার্থীকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরীক্ষায় উপস্থিত সিটে তার স্বাক্ষর রয়েছে। ঘটনার পর শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

টঙ্গী সাহাজ উদ্দিন সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে। রাতে পাইলট স্কুলে গিয়ে দেখি আমাদের পরীক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্যায়ভাবে ইমনকে পুলিশে তুলে দিতে চেয়েছিলেন হল সুপার। রাতে গিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে এনেছি।’

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আজ বিষয়টি শুনেছি। প্রয়োজনে কেন্দ্র পরিদর্শন করা হতে পারে। তারপর ব্যবস্থা নেব।’ এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষক আতিয়ার রহমান ও মনিরা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।