Leadকর্পোরেটবাণিজ্যশীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা জার্নাল রিপোর্ট

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের জন্য নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গভর্নর বলেন, যারা ব্যাংকটির অর্থ আত্মসাৎ করে চলে গেছেন, তাদের যদি নামে-বেনামে কোনো শেয়ারহোল্ডিং থাকে তা আমরা টেকওভার করছি। এস আলম গ্রুপের সব শেয়ার আমরা আইনগতভাবে টেকওভার করবো।

তিনি আরও বলেন, তবে তারা যদি টাকা ফেরত দিতে পারে তাহলে শেয়ার ফেরত পেতেও পারে। তবে আমরা মনে হয় না তাদের সেই উদ্দেশ্য আছে। যা লুট করার তা লুট করে ফেলেছে তারা।

সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়া মুক্ত’ করার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। তারা ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ঋণ বিতরণে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকটিতে যেতে পারছিলেন না এস আলমপন্থী কর্মকর্তারা।

সেই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় আট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও পাঁচজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। বাকি দুজন ব্যাংকের দুটি বিভাগের প্রধান রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তাদের বরখাস্ত করা হয়।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত কর্মকর্তাদের সবাই এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন। তিনি এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের একান্ত সচিব ছিলেন। বরখাস্ত আরেকজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মিফতাহ উদ্দিন ব্যাংকের ঋণের দায়িত্বে ছিলেন। তারা দুজন ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ও মানবসম্পদ বিষয়গুলো দেখতেন।

বরখাস্ত বাকি কর্মকর্তারা হলেন, ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাব্বির, কাজী মো. রেজাউল করিম ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া প্রধান অর্থ পাচার প্রতিরোধ কর্মকর্তা (ক্যামেলকো) তাহের আহমেদ চৌধুরী ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপ ব্যাংক থেকে অর্থ সরাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এমন সময় ব্যাংক থেকে কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একদিনেই ৮৮৯ কোটি টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়। তবে ব্যাংকের কর্মকর্তারা তা জানতে পেরে এসব লেনদেন আটকে দেন। অর্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিল গোল্ডেন স্টার ও টপ টেন ট্রেডিং হাউজ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান।