Leadসব সংবাদ

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিচালনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা চান অভিভাবকরা

দেশের ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় একটি শায়ত্তশাসিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় গ্রহণযোগ্য একটি নীতিমালা প্রণয়নেরও দাবি জানান তারা।

করোনার মহাদুর্যোগের সময় অর্ধেক টিউশন ফি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর সামনে কয়েকদিন থেকেই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন অভিভাবকরা। বুধবার (১৫ জুলাই) উত্তরার ইন্টার ন্যাশনাল হোপ স্কুলের সামনে ব্যতিক্রমি ‘সাদা পতাকা প্রর্দশন’সহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। টিউশন ফি কমানোর দাবির আন্দোলনের এক পর্যায়ে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে ৬ দফা দাবি আদায়ে মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন অভিভাবকরা।

বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক এ কে এম আশরাফুল হক এবং সংগঠনের সদস্য সচিব আজম সালাউদ্দিন এসব তথ্য জানান।

ফোরামের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ৫ দিন মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের ব্যানারে। সর্বশেষ মাস্টার মাইন্ড স্কুলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

ফোরামের আহ্বায়ক এ কে এম আশরাফুল হক এবং সংগঠনের সদস্য সচিব আজম সালাউদ্দিন বলেন, ‘করোনার এই মহাদুর্যোগে অমানবিকভাবে পুরোপুরি টিউশন ফি আদায় করছে স্কুলগুলো। ইচ্ছা মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এই সময় অর্ধেক টিউশন ফি আদায়ের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সরকারের হস্তক্ষেপে মানবিক স্কুল চাই। আর সে লক্ষে কয়েকদিন ধরেই মানববন্ধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। ‘

করোনার কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সময় ক্লাস না হলেও পুরোপুরি টিউশন ফি আদায় করছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলো। কোনও কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। যারা টিউশন ফি দেয়নি তাদের অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের ব্যানারে অভিভাবকরা বিভিন্ন স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। বুধবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলের সামনে সাদা পতাকা প্রদর্শনসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন অভিভাবকরা।

বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক এ কে এম আশরাফুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে প্রতিষ্ঠান না চললেও স্বাভাবিক সময়ের মতো টিউশন ফি আদায় করছে। একই সঙ্গে আনুসঙ্গিক ফি দাবি করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এই পরিস্থিতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি মেডিক্যিাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্বশাসিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রয়োজন। তাছাড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।   

বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের সদস্য সচিব আজ সালাউদ্দিন বলেন, ‘দেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোয় ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা টিউশন ফি রয়েছে। আর বুক প্রাইস ও স্টেশনারিসহ বিভিন্ন খাতে হরগামেশায় টাকা দিতে হয়। এছাড়া বিদেশ ট্যুরের জন্য ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা দিতে হয় ইংলিশ মিডয়াম স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক এ কে এম আশরাফুল হক বলেন, ‘করোনার এই সময় দেশের সব মানুষ বিপর্যস্ত। অভিভাকরা অহসায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। চাকরিজীবী ছাড়া বেশিরভাগ মানুষের উপার্জন কমে গেছে। এছাড়া পুরোপুরি শিক্ষাদান স্কুলে হচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের অর্ধেক টিউশন ফি নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।  আগামী কাল (বুধবার, ১৫ জুলাই) আমরা উত্তরা ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলের সামনে সাদা পতাকা নিয়ে ৬ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবো।’

অভিভাবকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিচালনায় সরকারের হস্তক্ষেপে স্বায়ত্তশাসিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করতে হবে। গহণযোগ্য নীতিমালা তৈরি করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে দুই জন অভিভাবক প্রতিনিধি রাখতে হবে। যৌক্তিকভাবে টিউশন ফি, ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি নিতে হবে।

করোনা মহামারির এই সময় অভিভাবকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে স্কুলের ভর্তি, টিউশন ফিসহ অন্যান ফি যারা জমা দিতে পারেনি তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে বহিস্কার করা যাবে না, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে তাদের সুযোগ দিতে হবে। ৫০ শতাংশ ফি আদায়ে কিস্তি করে দিতে হবে।