শিক্ষা-সংস্কৃতিসারাদেশ

আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাবি উপাচার্য

আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বাসভবনে প্রবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। রবিবার (১২ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে থেকে প্যারিস রোড হয়ে বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উপাচার্যসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় ও পুলিশের হামলার বিচার দাবিতে রবিবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় তাদের ওপর হামলা হয়েছে। তারা এর বিচার দাবি করছেন।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী মিলে প্রশাসন ভবনে তালা দেন। পরে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। আধ ঘণ্টা সেখানে অবস্থানের পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় উপাচার্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসলে তোপের মুখে পড়েন।

প্যারিস রোডে আন্দোলনের এক পর্যায়ে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলে তারা রাজি হন। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর যেতে চাইলেও উপাচার্য সাবাস বাংলাদেশের মাঠের দিকে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ধরেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি সফিকুন্নবী সামাদীসহ কয়েকজনের সহায়তায় উপাচার্য সিনেট ভবনের বারান্দায় অবস্থান নেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করেন। আড়াই ঘণ্টা পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় উপাচার্য তার বাসভবনে প্রবেশ করেন।

ঘটনার শুরু শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায়। সেদিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধে। প্রায় আট ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আগুন দেওয়া হয় বিনোদপুর বাজারের কয়েকটি দোকান ও পুলিশ বক্সে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ ও সাত প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়। শিক্ষার্থীদের থামাতে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটক এলাকা হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশ। এরপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেট এলাকা ছেড়ে মূল ক্যাম্পাসে চলে আসেন। এর আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থামাতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। তখন বাজার থেকে সরে যান ব্যবসায়ীরা। দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।