আলাউদ্দিন মার্কেটের লিফট ত্রুটিপূর্ণ ছিল
ঢাকা জার্নাল : রাজধানীর উত্তরার আলাউদ্দিন মার্কেটে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মার্কেট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা অভিযোগ করেছেন, ছিঁড়ে পড়া লিফটটি দীর্ঘদিন ধরেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। বিষয়টি বারবার জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি ওই লিফটির তার গত বছর একই সময় ছিঁড়েছিল বলে তারা জানিয়েছেন।
টাওয়ারের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা বলেন, গত বছর রমজানে লিফট ছিঁড়লেও মার্কেট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
উত্তরার আলাউদ্দিন মার্কেটের দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এমনটি বলছেন বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে। কমিটি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
উত্তরার রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের পেছনে আলাউদ্দিন টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্স। ১৪ তলা ভবনটির ছয়তলা পর্যন্ত পোশাক, অলংকার, ইলেকট্রনিকস ও প্রসাধনীর দোকানপাট।
শপিং কমপ্লেক্সের প্রবেশমুখের দুই পাশে দুটি লিফট আছে। এর মধ্যে বাঁ পাশের লিফটটি ছিঁড়ে নিচে পড়েছে। ভবনের সামনের রাস্তাজুড়ে প্রচুর কাচের গুড়া এবং কিছু জুতা-স্যান্ডেল, ভবনের ভেতরের দোকান থেকে ছিটকে আসা বিভিন্ন টুকরো জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে।
ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ভবনটির বেজমেন্ট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।
ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে। ভবন বিশেষজ্ঞ, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের মতামত, গ্যাসের লাইন বিশেষজ্ঞের মতামত ও রাজউকের মতামত নিলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনার তদন্ত করছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।
ঈদের কেনাকাটার জন্য রাজধানীর অন্য মার্কেটগুলোর মতো উত্তরার আলাউদ্দিন মার্কেটও শুক্রবার সন্ধ্যায় ছিল সরগরম। কিন্তু আকস্মিক দুর্ঘটনায় উৎসবমুখর পরিবেশ মুহূর্তেই বিভীষিকায় পরিণত হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় আলাউদ্দিন মার্কেটে আগুন লাগে। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ফায়ার সার্ভিস। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানায়নি তদন্ত কমিটি।
ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থল ঘেরাও করে রাখা হয়। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছোট ছোট দলে ভাগ করে ব্যবসায়ীদের মার্কেটের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা সাত জন। এর মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কেটের ক্যাপসুল লিফট ছিঁড়ে প্রাণ যায় ছয় জনের। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিন সদস্য রয়েছেন। আগুনে দগ্ধ মাহমুদুল হাসান ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ঢাকা জার্নাল, জুন ২৫, ২০১৬।