Leadসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

আমাদের ভাষাকে আমাদেরই মর্যাদা দিতে হবে

Awardedঢাকা জার্নাল:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ভাষাকে আমাদেরই মর্যাদা দিতে হবে। আমাদের ভাষাকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভাষা দিবসে সমাজের গুণীজনদের সম্মানিত করতে পেরে নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি।’

শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৬ সালে একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে রেপ্লিকা তুলে দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পদকপ্রাপ্তদের সোনার তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের পদক, দুই লাখ টাকা, সম্মাননাপত্র এবং একটি রেপ্লিকা দেওয়া হয়। এ সময় তিনি জাতীয় চারনেতাসহ ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী কবি আব্দুল হাকিমের বঙ্গবাণী কবিতা থেকে,

‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।’ আবৃতি করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১২ মাইল দূরের পাকিস্তান আমাদের উপর জোর করে উর্দুকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা তখন মেনে নেয়নি। আমাদের আত্মপরিচয়, আত্মমর্যাদা শিক্ষা দেয় এই একুশ। কারো কাছে মাথা নত না করা শেখায় এই একুশ।’

তিনি আরো বলেন, ‘মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিজের ভাষার স্বকীয়তা রক্ষা করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য, চাকরির জন্য অন্যান্য ভাষা শিখতে হবে। তবে মাতৃভাষাকে ভুলে গেলে চলবে না। রক্তের বিনিময়ে পাওয়া ভাষাকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের যেকোনো অর্জন রক্তের বিনিময়ে, সংগ্রামের মাধ্যমে পেয়েছি।’

বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১৬ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’প্রদান করা হয়েছে।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন- ভাষা আন্দোলনে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সাঈদ হায়দার, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া (মরণোত্তর) ও জসিম উদ্দিন। শিল্পকলায় অভিনেত্রী বেগম জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সংগীতে পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, সংগীতে শিল্পী শাহীন সামাদ, নৃত্যে আমানুল হক এবং চিত্রকলায় কাজী আনোয়ার হোসেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মফিদুল হক এবং সাংবাদিকতায় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। গবেষণায় অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ এবং মংছেন চীং মংছিন। এ ছাড়া ভাষা এবং সাহিত্যে জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ এবং হাবিবুল্লাহ সিরাজী।

এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদকের জন্য ওই ১৬ জনের নাম ঘোষণা করে।

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

ঢাকা জার্নাল, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.