Leadসব সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণ বন্ধ করেছিল বিএনপি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আমার পর আন্তর্জাতিক মাতৃষভাষা ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দিয়েছিল।  আমরা যখন দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আমি তখন ইনস্টিটিউটের কাজ সম্পন্ন করি। ’

রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃষাভাষা দিবসের চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।     

বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বি করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার অধিকার রক্ষা করা, ভাষাকে সম্মান দেওয়া, পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া ভাষাকে সংরক্ষণ করার জন্যই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আমি গড়ে তুলি। যখন ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি, তখন জাতি সংঘের মহাসচিব কফি আনান আমার সঙ্গে ছিলেন। দুর্ভাগ্য হলো যে ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। তখন বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আন্তর্জাতিক মাতৃষভাষা ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দিয়েছিল।  আমরা যখন দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি তখন ইনস্টিটিউটের কাজ সম্পন্ন করি। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে ভাষা যাদুঘর করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য সারাবিশ্বের হারিয়ে যাওয়া ভাষা এবং চলমান ভাষাগুলো রাখা, গবেষণা করা, ভাষার ইতহাস সংগ্রহ করা এবং এ ব্যাপারে যারা শিক্ষা গ্রহণ করবেন, গবেষণা করবেন, তারা যেনও সুযোগ পায়। কারণ একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের, আর সে কারণেই আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট তৈরি করি। অন্য ভাষাগুলোও যেন আমরা এখানে সংরক্ষণ করি। যাতে হারিয়ে না যায়, সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। কাজেই আমি মনে করি, এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের জন্য সম্মানজক একটি প্রতিষ্ঠান।  ইউনেস্কো এটি দ্বিতীয় ক্যাড়ারিতে উন্নীত করেছে। ’

উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আর বলেন, ‘আমাদের ভাষার ওপর এমনভাবে আঘাত এসেছে, প্রথমে আসলো, আরবি হরফে বাংলা লিখতে হবে। যখন আন্দোলন শুরু করলো যে আমরা মাতৃভাষায় কথা বলতে চাই, তখন আমাদের অক্ষরই বদলে দিতে হবে। আরবিতে বাংলা লিখতে হবে। পরবর্তীতে আসলো ল্যাটিন অক্ষরে বাংলা লিখতে হবে। তখনও আন্দোলন করেছি। আমাদের বাংলা শব্দে কী সমস্যা হচ্ছিল জানি না, কিন্তু তার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের অন্য ভাষা শিখতে হবে। সেইসঙ্গে আমাদের মাতৃভাষাও শিখতে হবে। আমাদের ক্ষৃদ নৃ-গোষ্ঠী তাদের ভাষাও সংরক্ষল করতে হবে। তার জন্য আমি যেমন বিনা পয়সায় ছাপিয়ে দিচ্ছি যেনো তারা নিজের ভাষা শিখতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক তুলে দেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরূ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী।

‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক-২০২১’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক-২০২১’-এ দুই ক্যাটাগরিত পদক দেওয়া হয়। নীতিমালা অনুযায়ী পদক হিসেবে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র এবং চার লাখ টাকা বা পাঁচ হাজার ডলার দেওয়া হচ্ছে।

পদকপ্রাপ্ত দেশিয় দুই জন হলেন— জাতীয় অধ্যাপক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। বিদেশি ব্যক্তি হলেন— উজবেকিস্তানের নাগরিক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ। আর প্রতিষ্ঠানটি হলো— বলিভিয়ার অ্যাক্টিভিজমো লেংকুয়াস।

#