আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশ বড় ভূমিকা রাখছে
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভূরাজনৈতিক অবস্থান বাংলাদেশকে বিশ্বরাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ‘অ্যাক্টরে’ পরিণত করেছে। আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশ তাই বড় ভূমিকা রাখছে। শনিবার সকালে মিরপুর সেনানিবাসে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স ও এএফডি কোর্সের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন আরো অধিক আন্তঃনির্ভর বিশ্বে বসবাস করছি। এখানে উন্নত রাষ্ট্রগুলো নানা ধরনের নীতি গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু এসব নীতি উন্নয়নশীল দেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়। তাই উন্নয়নশীল দেশের জন্য অবশ্যই যুৎসই নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজকে (এনডিসি) তার মান ও কারিক্যুলাম ধরে রাখার আহ্বান জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এনডিসি কর্মকর্তা ও কোর্স সম্পন্নকারীরা তাদের জ্ঞান, দৃঢ়তা ও দায়বদ্ধতার মাধ্যমে জাতিকে স্থিতিশীলতা, উন্নতি ও ক্ষমতায়নের দিকে এগিয়ে নেবেন।
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, এনডিসি কোর্স গ্র্যাজুয়েটদের যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরো সক্ষম করে তুলবে।
তিনি বলেন, বহুমাত্রিক বিশ্বে জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি সংযোগের গুরুত্ব বাড়ছে। কিন্তু প্রযুক্তিগত সুবিধার অপব্যবহার মাঝেমধ্যে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে উগ্রপন্থি ও সন্ত্রাসীরা মানবিকতাকে পদদলিত করে তাদের থাবার বিস্তার ঘটাচ্ছে।
তিনি বলেন, নতুন গ্র্যাজুয়েটরা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বিভিন্ন পেশায় যোগ দেবেন। আশা করি, তারা তাদের অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে দেশ সেবার পাশাপাশি বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকা রাখবেন।
অনুষ্ঠানে এনডিসির কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দী গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানান।
দেশি এবং বিদেশি সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের ৭৫ জন গ্রাজুয়েট এনডিসি কোর্সে অংশ নেন। আর এএফডি কোর্সে অংশ নেন ৩৭ জন।
মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, এমপি, বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত ও তিন বাহিনীর প্রধানরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী দুই কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল একটি গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ ও ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন। নানা প্রতিকূলতা সত্বেও সরকার দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সরকার ব্যবস্থায় সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে ওঠে। আশা করি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে তারা সব সময়ই জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবেন। যেকোন দুর্যোগে তারা তাদের পাশে থাকবেন এবং আন্তরিকতা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশের অবকাঠোমো উন্নয়ন ও বিশ্বশান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর অংশীদারিত্ব আগামী দিনে আরো মজবুত হবে।