Leadসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

অস্টম বেতন কাঠামো, ১০ও ১৬ বছরে বেতনের গ্রেড পরিবর্তন

Muhitঢাকা জার্নাল: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষ ক্যাডারের শিক্ষকসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সুযোগ সুবিধা অক্ষুন্ন রেখে এক সপ্তাহের মধ্যে অষ্টম বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

রোববার(১ নভেম্বর) সচিবালয়ে বেতন ভাতা বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর তিনি এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, কারো সুযোগ সুবিধা কমানো যাবে না। যার  যা সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তার সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখে যদি আরও ভালো করা যায়, তা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সব ক্যাডারই গ্রেড ১,২,৩ এ যেতে পারবে। আমরা পজেটিভ সমাধান চাই।

এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুলমাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বেতন-ভাতা বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নহিদ, অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীসহ মন্ত্রী এবং সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী প্রেস ব্রিফিংয়ে, বেতন-ভাতা কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ আমরা পাচ্ছি। তার মধ্যে বিশেষ বিশেষ অভিযোগ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, সার্ভিস ক্যাডার শিক্ষক সমিতি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। এসব প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা সমন্ধে অনেক আপত্তি রয়েছে। এসব শিক্ষকরা সমাবেশ করেছেন, শিক্ষকরা মন্ত্রীর (শিক্ষামন্ত্রী) সঙ্গে দেখা করেছেন।

মুহিত বলেন, আমরা কেবিনেটে সিদ্ধান্তের পর যে নির্দেশনামা তৈরি করছি, তাতে নতুন যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা যুক্ত হয়ে জারি হবে। নির্দশনামা জারির আগ পর‌্যন্ত যা কিছু হচ্ছে তা আগের নিয়মেই হচ্ছে। সেখানে আমরা কোনো বাধা দেইনি। নির্দেশনামা যেদিন জারি হবে সেদিন থেকে এটা কার্যকর হবে।

আমরা আলোচনায় হয়েছে। আমরা মনে করি এখন যে স্কেলটা আমরা দিচ্ছি, এটা অতন্ত্য ভাল একটি স্কেল। সরকারি সেক্টরই বলেন আর বেসরকারি সেক্টরই বলেন, এই স্কেলে প্রত্যেকেরই সুযোগ সুবিধা থাকছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নেই। এই স্কেল যারা এতোদিন পেয়ে আসছেন তাদের সুযোগ কমানোর কোনো উদেশ্য নেই। আমাদের কমিশনের রিপোর্টেও তা ছিলনা, সিদ্ধান্তেও ছিল না। নির্দেশনামা যেটা তৈরি করছি তার মধ্যেও নেই। আমরা সবাইকে নিশ্চিত করতে চাই- প্রত্যেক ক্যাডারই গ্রেড-১ যেতে পারবেন। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। এটা আগে ছিল না। আগে চয়-সাত ক্যাডার যেতে পারতো। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে প্রত্যেক ক্যাডাই গ্রেড ৩, ২ এবং ১ –এ-তে সবাই যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা ইতিবাচক সমাধান চাই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

আজকে আমরা যে আলোচনা করলাম- তাকে প্রত্যেকেরই মতামত হলো আমরা পজেটিভ সমাধান চাই। তবে কালকেই যে পেয়ে যাবেন তা নয়। আরো তিন চার দিন লাগবে।

এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সার্ভিস ক্যাডারের শিক্ষক মনে করছেন তাদের সুযাগ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা সত্য নয়। তারা যেনো উপরে ওঠেন সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করেছি। তবে টাইম স্কেল দেবো তার যখন এতো বছর হবে তখন তার সয়ক্রিয়ভাবে বেতন বেড়ে যাবে। এখানে দুটি অপশন আছে- দশ বছর যদি চাকরিতে অ্যাকটিভ এইজে থাকেন, তাহলে একটি লেবেল জাম্প করবেন। সেখানে যদি (ওই এজের সঙ্গে) আরো ছয় বছর থাকে তাহলে আরেকটি লেবেল জাম্প করবে। এটাই হচ্ছে সুযোগ বৃদ্ধির শ্রেষ্ঠ উপায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য রয়েছে। তাদের বিষয়টি খেয়ালে রেখেছি। কোনো বৈষম্য আমরা রাখতে চাই না। এগুলো করতে সময় লাগবে। আমরা মনে করছি এই সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং করার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নির্দেশনামা জারি করা হবে। ইতোমধ্যেই আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। আজকের সভার আগেও আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখান থেকেও ওই নির্দেশনা এসেছে কারো সুযোগ কমানো যাবে না। যার যা সুযোগ সুবিধা ছিল সেটা প্রটেক্ট করে যদি আরো কিছু ভাল করা যায়।

মনে হয় আর কোনো প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভা কমিটিতে ৫ জন মন্ত্রী এবং ৭ জন সচিব রয়েছেন। পাঁচ মন্ত্রীর মধ্যে একজন মন্ত্রী যার বিষয় থাকে তিনি থাকেন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ রেখে অস্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন দেয়ওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ফেডারেশনের ব্যানারে আন্দোলনে নামেন।

আন্দোলন চলাকালে গত ২৯ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গত ৩১ অক্টোবর পর‌্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে ১ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয় শিক্ষক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ১, ২০১৫।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.