সংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

অবিলম্বে সুন্দরবন বিধ্বংসী রামপাল প্রকল্প বাতিল করতে হবে

08বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের নেতৃবৃন্দ জনমতকে উপেক্ষা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাব ও মিথ্যা প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষায় পুরস্কার পেয়েছেন। সেই পুরস্কারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীয় উচিত হবে প্যারিসে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে যোগদানের আগেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করা।

আজ ২৯ অক্টোবর মুক্তিভবনস্থ সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাজ্জাদ জহির চন্দন।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ভারতের বিদায় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরেন ‘রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে, সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না’ বলে সম্প্রতি যেসব কথা বলেছেন, তা চরম অসত্য ও অগ্রহণযোগ্য। তাদের বক্তব্য আসলে প্রকল্পের পক্ষে নি¤œস্তরের সাফাই মাত্র। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যদি সুন্দরবন বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়, তাহলে এই প্রকল্প ভারতে কেন করা হলো না? ভারতের পরিবেশ আইনে এই প্রকল্প বেআইনি কেন? ভারতের কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়–তে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কেন বাতিল করা হয়েছে? রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে গিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ৫৯টি শর্ত কেন উপেক্ষা করা হচ্ছে?

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ভারতের সাথে অসম ও অস্বচ্ছ চুক্তির ফলে বাংলাদেশে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হবে। সুন্দরবনের অস্তিত্ব ভয়াবহ হুমকির মধ্যে পড়বে। ভারতের কর্তৃপক্ষ ও আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই গাওয়া হচ্ছিল যে এখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। সাম্প্রতিক সময়ে পশুর চ্যানেলেসহ গত ১৩ মাসে ৫টি দুর্ঘটনা সুন্দরবনকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলেছে। এসব দুর্ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহনের কারণে সুন্দরবনের অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে।

সভায় নেতৃবন্দ বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর একজন কর্মকর্তা যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদ-াদেশ নিয়ে উদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধাদেরও বিচারের দাবি করেছেন। তাহলে কি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ‘মানবাধিকার’ মানে দেশে দেশে মুক্তিসংগ্রামের বিরোধিতা করা? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের দীর্ঘসূত্রিতা, কালক্ষেপণ আর নানা ধরনের হিসাব-নিকাশ ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ করে দিচ্ছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.