৪ রানের আক্ষেপ নাকি স্বপ্নের জলাঞ্জলি?
সুভাশিষ বড়ুয়া সুমন
৮ জুন সকাল ও ১০ জুন রাতের মধ্যে পার্থক্য কী? ৮ জুন কাক ডাকা ভোরে মুয়াজ্জিন সাহেবের ফজরের নামাজের পরে, বা কোনো এক প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক জমিতে যাওয়ার সময়,বা পোশাক শ্রমিক আমেনার কারখানায় যাওয়ার প্রাক্কালে দুপুরের খাওয়ার বাক্স বন্দি করা,হয়তোবা পার্বত্য অঞ্চলের কোনো জুম চাষির পাহাড়ের ঢালে ওঠার সময় ব্যাট বলের লড়াইয়ে টাইগারদের মেতে ওঠা, জয়উল্লাসে মেতে ওঠা। তার বিপরীতে ১০ জুন রাতে এদের সবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে নির্ঘুম রাত কাটানো, রাগ ক্ষোভ,কষ্টের মাঝে বুক ডুকরে কান্নার কষ্ট। হয়তোবা অনেকেই রাতের খাবার না খেয়েই দামাল বাঘেদের জন্য চোখের জল ফেলেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে খেলতে নামার আগে আমাদের শঙ্কা ছিল টপ অর্ডারের টাপুর টুপুর উইকেট বিলানো,বা আমাদের নতুন বলের জোরে বোলারদের পাওয়ার প্লেতে না ছেলে খেলায় মেতে ওঠে। বোলাররা তাদের জান বাজি রেখে সবটা উজাড় করে ১১৩ রানে আটকে দিলো মাইটি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সত্যি বলতে লো স্কোরিং ম্যাচে কী হয় কী হয় ভয় নিয়ে টিভি সামনে বসা আমার মতো অনেকেই দোয়া দুরুদ পড়েছেন,প্রার্থনা করেছেন।
কিন্তু ভাগ্য যখন মুখ ঘুরিয়ে নেবে কী বা করার থাকে। নতুবা বাংলাদেশের ব্যাটিং এর সুপার হিরো মাহমুদউল্লাহর মারা ১৯.৫ বলের সেই মহাকাব্যিক শট কেনো কেশব মহারাজের হাতে পাখির মতো ধরা দেবে?
হারলো কেন? খারাপ ব্যাটিং? আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত? বাংলাদেশ ইনিংসের ১৭ থেকে ১৮তম ওভারে রান বের করতে না পারা? নাকি ভাগ্যদেবীর নির্মম পরিহাস? চার রানের আক্ষেপ আমাদের সামনের ম্যাচ গুলোকে খুবই বিপদজনক করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের অধিনায়ক নাজমুল ও লিটন এর রান করতে কৃপণতা বা মাঠ থেকে ড্রেসিং রুমে ফেরার তাড়া নিয়ে আমাদের চুলচেরা বিশ্লেষণ কোন ধরণের বিশেষণে বিশেষায়িত করবো তাইতো ভেবে পাইনা। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সোচ্চার তামিম ইকবাল, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ও মরনে মরকেলের মতো ডাকসাইটে খেলিয়ে।
মজার বিষয় সামনের ম্যাচে সেই ঘুনে ধরা টপ অর্ডার নিয়েই আমরা নামবো মাঠে,আশায় বুক বাঁধবো,হয়তো হাসবো নয় কাঁদবো। কিন্তু ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নের জলাঞ্জলি নিয়ে মাথা ঘামাবে কে? আমাদের মাস্টার মাইন্ড হাতুরু? তাহলেই হয়েছে।
লেখক: ক্রিকেট সমর্থক