সাকার আইনজীবীর অফিসের কম্পিউটার জব্দ
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের খসড়া ‘ফাঁসের’ ঘটনায় তার আইনজীবী ফখরুল ইসলামের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার জব্দ করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় শুক্রবার বিকালে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের তদন্তের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ফখরুল ইসলামের কাকরাইলের অফিস থেকে কম্পিউটারের পাশাপাশি ‘আরো কিছু জিনিসপত্র’ জব্দ করা হয়েছে।
মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে কৃষ্ণপদ জানান।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার ফখরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি চেম্বারে ছিলাম না। তবে চেম্বারের লোকজন আমাকে জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটার দিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শ খানেক লোক এসে আমাদের লোকজনকে ঘিরে ফেলে এবং তল্লাসি করে।”
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী বলেন, চেম্বারে তার কক্ষ তালাবন্ধ ছিল। অভিযানের কথা শুনে তিনি চাবি পাঠিয়ে দিলেও তা পৌঁছানোর আগেই পুলিশ দরজা ভেঙে তার ঘরে ঢোকে।
“সেখান থেকে দুটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায়ের সার্টিফাইড কপির একটি ফটোকপি নিয়ে গেছে। ৪টার দিকে ডিবি পুলিশ চলে গেছে।”
গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায়ের দিন তিনি ও তার পরিবার অভিযোগ তোলেন, ওই রায়ের কপি আগের দিনই একটি ওয়েবসাইটে পেয়েছেন তারা।
ওই রায় আইন মন্ত্রণালয়ে তৈরি হয়েছে এবং মন্ত্রণালয় থেকে তা ফাঁস হয়েছে বলে সালাউদ্দিন কাদেরের স্ত্রী দাবি করলেও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তা উড়িয়ে দেন।
এরপর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার নাসির উদ্দিন মাহমুদ বুধবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার কয়েকদিন আগে খসড়া পর্যায়ে তা ফাঁস হয়ে থাকতে পারে। ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকেই খসড়া ‘লিকড’ হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের জিডিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রচারিত সমস্ত রায় ট্রাইব্যুনালেই প্রস্তুত করা হয়। রায় ঘোষণার আগে রায়ের কোনো অংশের কপি অন্য কোনোভাবে প্রকাশের সুযোগ নেই। কিন্তু তারপরও কথিত খসড়া রায়ের অংশ কীভাবে ইন্টারনেটে প্রচারিত হলো বা কীভাবে ট্রাইব্যুনাল থেকে খসড়া রায়ের অংশবিশেষ ফাঁস হল তা উদ্বেগের বিষয়।”
ওই জিডির তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশ বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে যায় এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় যে কম্পিউটারে কম্পোজ করা হয়েছিল, তা জব্দ করে। রায়ের খসড়া কম্পোজের কাজে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
ওই কম্পিউটার থেকেই রায়ের খসড়া আগে কোনোভাবে ফাঁস হয়েছিল বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা।