সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চায় না ডাকসু

ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০


সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিতে যাচ্ছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়৷ এ পদ্ধতিতে না যাওয়ার পক্ষে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ তাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছে ডাকসুও৷ শনিবার (৮ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা অনুষ্ঠিত তৃতীয় নির্বাহী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করে জানিয়েছেন ডাকসুর সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম (জিএস) রাব্বানী৷

গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ডাকসুর সদস্যরা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঐতিহ্য রয়েছে এবং ৭৩’এর যে অধ্যাদেশ রয়েছে সে অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে৷’

আজকের সভার আলোচ্য বিষয় ছিল পূর্ববর্তী নির্বাহী সভার কার্যবিবরণী নিশ্চিতকরণ, বর্তমান ডাকসুর মাধ্যমে ব্যয়কৃত অর্থের অডিট সম্পন্নকরণ, অনলাইন পে-মেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় লেনদেন পরিচালনার ব্যবস্থাকরণ, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিবহণ সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা, গুচছ বা সমন্বিত ভর্তি সংক্রান্ত আলোচনা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য সংস্কার ও ইতিহাস সংরক্ষণ বিষয়ে আলোচনা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সুযোগ নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আলোচনা, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য নবীন বরণ আয়োজন, ক্যাম্পাসে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে করণীয় নির্ধারণ, বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়ন ফি নীতিমালা, হলে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সিট বণ্টন নিশ্চিত করণ, ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান নির্দিষ্টকরণ নীতিমালা।

সভা সূত্রে জানা যায়, এসব আলোচ্যসূচির মধ্যে ব্যয়কৃত অর্থের অডিট সম্পন্ন করতে দুই ধাপে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে৷ প্রথম ছয় মাসের হিসাব আগামী তিনদিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী ছয় মাসের হিসাবের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করা হবে৷ এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷

পরিবহণ সমস্যার সমাধানে তিনটি নতুন বাস সংযোজন করা হবে এবং কুমিল্লা বিশ্বরোড পর্যন্ত নতুন রুট চালু করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু মোমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের আর্থিক সহায়তা পেলে ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে এবং পুরোনো যতগুলো ভাস্কর্য রয়েছে যেগুলো সংরক্ষণ এবং পাদটিকা সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিভিন্ন বিভাগের উন্নয়ন ফি কমানোর দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে৷

হলগুলোতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সিট বণ্টনের বিষয়ে যদি কোনও হলে কোনোধরনের ব্যত্যয় ঘটে থাকে,তাহলে প্রত্যেকটি হলের প্রভোস্ট এবং আবাসিক শিক্ষকদের জানাতে বলা হয়েছে এবং যেসব ছাত্রের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে তাদের পনেরো দিনের পরিবর্তে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে হল ছাড়তে ডাকসুর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাঁচটি হলে বাংক বেড দেওয়ার পক্ষে উপাচার্য একমত হয়েছেন,

পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে গোলাম রাব্বানী জানান, আজকের সভার এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল না,তবে আমাদের সভাতে সেটি উঠেছে,এক্ষেত্রে কেউ বিরোধীতা করেনি৷আর আমি চাই ডাকসু নির্বাচন ধারাবাহিকভাবে হোক৷

সভায় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন দাবি তুলেছেন যে, প্রত্যেকটি হলের গেস্টরুমগুলোতে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার৷ তখন ভিসি উপস্থিত সবাইকে গেস্টরুমগুলোতে কোনও শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে কিনা জিজ্ঞাসা করেন৷ এর উত্তরে ছাত্রলীগ প্যানেলের ২৩জন বলেছেন কোনও নির্যাতন হয় না৷ এসময় আকতার হোসেন আরেকটি দাবি করেছেন যে,কোনও কোনও বিভাগে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ে ফলাফল দেওয়া হয় না, এ দাবির বিষয়ে উপাচার্য তাকে ওই বিভাগুলোর নাম জানাতে বলেছেন৷

ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো.আখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর কোষ্যাধক্ষ ও ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম,সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সাংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার,সাহিত্য সম্পাদক মাযহারুল কবির শয়ন,পরিবহণ সম্পাদক শামস-ই নোমান ও সদস্য রকিবুল ইললাম ঐতিহ্য,তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ৷