শিক্ষা-সংস্কৃতি

শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে ১০ দফা সুপারিশ

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি মনিটরিং ব্যবস্থা কার্যকর না হলে শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। মানসম্মত শিক্ষা অর্জন সম্ভব হবে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বেসরকারি নাগরিক সমাজের সংগঠন ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন’ ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর গ্রিন লাউঞ্জ রেস্টুরেন্টে ‘মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে সচেতনতা এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ১০ দফা সুপারিশসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

সভায় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, সুশাসন অধিকার ও ন্যায্যতা কর্মসূচির উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা স্ট্রিট চাইল্ডের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ হৃদয় এবং এই প্রকল্পের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লিপি আমেনা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওয়েভ ফাউন্ডেশন বহুমুখী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন সহযোগী স্ট্রিট চাইল্ড-এর আর্থিক সহযোগিতায় ২০২১ সাল থেকে ‘দ্য সাউথ এশিয়ান অ্যাসেসমেন্ট অ্যালায়েন্স: কমিউনিকেটিং অ্যান্ড কোলাবোরেটিং ফর চেঞ্জ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলা হয়, নাগরিক উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের পঠন ও শিখন যাচাই এবং মূল্যায়ন করা। পাশাপাশি, জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সবার জন্য সমান সুযোগ, অভিগম্যতা ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি করা।

জরিপে উঠে আসা তথ্য তুলে ধরে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, শিক্ষাক্রমের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ মূল্যায়ন। জাতীয় প্রয়োজন এবং পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাক্রমে এই অংশ পরিমার্জিত হয়। শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে কি-না বা শিক্ষার্থীর মধ্যে সেই কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা তৈরি হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা হয় সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে। আর এটি নিশ্চিত করা হয় শিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন ধাপে, যাতে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও দক্ষতা সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়।

নাগরিক সম্পৃক্ততা ও বিভিন্ন উদ্যোগ এবং শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণে উন্নত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের পঠন ও গাণিতিক শিখন যাচাই ও মূল্যায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, শিখন পদ্ধতির এই মূল্যায়ন জরিপের ফলাফল ও সংশ্লিষ্ট সুপারিশ সরকারের কাছে তুলে ধরে সমাধান প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য জন্য প্রস্তাব করা হয় মতবিনিময় সভায়।

১০ দফা সুপারিশ

১. শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা

২. অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা;

৩. শিক্ষকদের ক্লাসে নিয়মিতকরণে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা;

৪. শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে শ্রেণির পাঠদান শ্রেণিতেই সম্পন্ন করা;

৫. অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা;

৬. শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;

৭. শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ;

৮. পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তৈরি ও বিতরণ করা;

৯. স্কুল ফিডিং কার্যক্রম প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকাতে চালু করা;

১০. গুণগত শিক্ষার মান উন্নয়নে নীতি নির্ধারক, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকল অংশীজনের মতামতের আলোকে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা।