মিথ্যাচার বন্ধ করে সুন্দরবন ধ্বংসী প্রকল্পসমূহ বাতিলের আহ্বান
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ মিথ্যাচার বন্ধ করে সুন্দরবন ধ্বংসী প্রকল্পসমূহ বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেছেন, তথাকথিত উন্নয়নের নামে সুন্দরবন ধ্বংসের কোনো ষড়যন্ত্র দেশবাসী মেনে নেবে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প স্থান ও বিকল্প পদ্ধতি আছে, কিন্তু সুন্দরবনের বিকল্প নাই। তাই সুন্দরবন রক্ষায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আজ ২৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও সাইফুল হক। এসময় সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, টিপু বিশ্বাস, বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, শহীদুল ইসলাম সবুজ, নাসির উদ্দিন নসু, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সুবল সরকার, মাহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন, শামসুল আলম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সুন্দরবনের কাছে ভারতের সাথে যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি করা হয়েছে, ওই চুক্তিতে ভারতই লাভবান হবে। আমাদের সুন্দরবন ধ্বংস হবে। সচেতন মানুষ হিসেবে আমরা এ ধরনের চুক্তি মেনে নিতে পারি না। তিনি বলেন জাতীয় স্বার্থে আন্দোলন করতে গেলে সরকার বারবার বাধাগ্রস্থ করছে। বাধা দিয়ে, হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। অতীতে আমরা আন্দোলন করে গ্যাস রপ্তানীর ষড়যন্ত্র বন্ধ করেছি এবারও আন্দোলন করে সুন্দরবন ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দাড়ানো হবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আপনি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্যা আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন। সেই আপনার হাতেই কেন সুন্দরবন ধ্বংস হবে?
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘মিথ্যাচার ও প্রতারণা বন্ধ করে সুন্দরবন ধ্বংসী প্রকল্প বাতিল এবং জাতীয় কমিটির সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি’ শীর্ষক এ সমাবেশে আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেন, ভারত সরকার সুন্দরবনকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে। আর বাংলাদেশ সরকারের কিছু কতিপয় কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যক্তি সুন্দবনকে ধ্বংস করতে ভারতকে সহযোগিতা করছেন।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সুন্দরবন রক্ষার জন্য আলাদাভাবে নীতিমালা করুন এবং সুন্দরবনকে আরো বৈচিত্রময় করে তোলার জন্য যা যা করার দরকার তাই করুন। সুন্দরবন ধ্বংসের প্রকল্প বাতিল করে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য প্রকল্প হতে নিন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
সমাবেশ থেকে আগামী ১৪ নভেম্বর সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় কনভেনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশ শেষে শত শত মানুষের বিক্ষোভ মিছিল নগরীর সড়ক প্রদক্ষিণ করে।