মানবপাচার, মামলা ও লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু
ঢাকা জার্নাল: মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি, বেশ কয়েকজন নেতাসহ মানবপাচারে অভিযুক্ত এজেন্টদের লাইসেন্স বাতিল এবং মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এবং সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসানের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর মানবপাচারে অভিযুক্ত এজেন্টদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব হাসিনা শিরীনের ১১ জুন স্বাক্ষরিত নোটিশটি সরকারি ছুটির দিন শনিবার (১৩ জুন) বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠানো হয়।
নোটিশে এজেন্টদের ওমরা লাইসেন্স বাতিলসহ ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং ২০১৪ সালের ওমরা নীতি অনুযায়ী কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্র পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নোটিশে এজেন্টদের বলা হয়, যেসব ওমরা হজযাত্রী সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে ফেরত আসেননি। এ কারণে সৌদি সরকারের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
গত ৩-৪ মাসে প্রায় ১০ হাজার ওমরা হজযাত্রী সৌদি আরব গিয়ে ফিরে না আসায় শেষ পর্যন্ত ওমরা ভিসাই বন্ধ করে দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার পর সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশি হজ কাউন্সেলর ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার অনুরোধ জানান। তিনি মানবপাচারে অভিযুক্ত ওমরা এজেন্সির তালিকাসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের পর পাচার হওয়া লোকজনকে ফেরত নিতে চাপ প্রয়োগের সুপারিশ করেন। মানবপাচার করা এজেন্সি মালিকদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতেও তিনি কয়েক দফা সুপারিশ করেন।
এ প্রেক্ষিতে গত ৮ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তরফে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে পাচারকারী এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল এবং এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
যদিও ওই সংবাদ সম্মেলনেই ধর্ম সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান মানবপাচারকারী হাব নেতাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পরও তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মানবপাচারে মামলার সুযোগ নেই।
তবে, শেষ পর্যন্ত গত ১০ জুন মন্ত্রী-সচিবের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে আসা চিঠি ও তালিকা অনুযায়ী, মানবপাচারের অভিযোগ রয়েছে- হাবের সভাপতি মো. ইব্রাহিম বাহার, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল, সহ-সভাপতি ফরিদ আহমদ মজুমদার, যুগ্ম-মহাসচিব মোজাম্মেল হোসেন কামালের এজেন্সির বিরুদ্ধে। অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন হাবের নির্বাহী সদস্য এন এম এইচ খাদেম দুলাল, আবু বকর সিদ্দিকী, আবুল মালেক, হাব চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াস, হাব সভাপতির জামাতা সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক অর্থসচিব মাহবুব মান্নাও। এছাড়াও অভিযুক্তদের তালিকায় আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, জুন ১৪, ২০১৫