শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

মওদুদকে জ্ঞানপাপী বললেন আমু

মওদুদকে জ্ঞানপাপী বললেন আমির হোসেন আমু

 

image_27471_0ঢাকা জার্নাল: মওদুদকে জ্ঞানপাপী বললেন আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা আমির হোসেন আমু।

সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মওদুদ আহমেদ তিস্তা চুক্তি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন। ‍

ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বলেন, আন্তনদী সংযোগ চলছে এবং টিপাইমুখে কাজ চলছে।”  

তিনি আরো বলেন, “২০১১ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছিলেন। তখন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল তিস্তা নদীর পানি বণ্টনে চুক্তি সাক্ষর হবে। কিন্তু তা আর হয়নি।

আগামীকাল যৌথ নদী কমিশনের সভা হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম যে ড্রাফট তৈরী করা হলে চুক্তি হয়ে যাবে। কিন্তু মাত্র দুদিনের নোটিশে সভা বাতিল করা হয়েছে। তাহলে যদি আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পারছি না। এটি আমাদের জাতীয় বিষয়। এতে আমি মর্মাহত হলাম। জাতীয় স্বার্থে ইস্যুতে সরকারী দল ও বিরোদী দল আলাপ আলোচনা করে কিকরে ঐক্যমতে আসতে পারি এ বিষয়ে মাননীয় স্পিকার আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করি।”

জবাবে আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরে যে কয়টি সরকার এসেছে তার অধিকাংশ সরকারেরই মন্ত্রী এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্টও ছিলেন। কিন্তু সে সমস্ত সরকারগুলো এ সমস্ত বিষয় নিয়ে কোন চিন্তা করেছিল বা পদক্ষেপ নিয়েছিল কিনা তার কাছে আমার এটি জিজ্ঞাসা। বিগত সরকারের সময় কোন আলোচনা করা বা পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” 

আমু বলেন, “ফারাক্কা চুক্তি, তিস্তা চুক্তিসহ কোন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেনিআজ সমস্ত বোঝা এসে পড়েছে শেখ হাসিনার ওপর। আগে বেগম খালেদা জিয়া তার সরকারের সময় ভারত গিয়েছিলেন, তার ভারত সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমান বন্দরে সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞাসা করেছিল তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভুলেই গিয়িছিলাম’।”

দেশের কোন জাতীয় সমস্যা যে দলের প্রধান ভুলে যান, সেই দলের একজন সদস্যের মনে রাখা উচিত ছিল এ প্রশ্ন উঠানোর আগে। 

আমু বলেন, “শেখ হাসিনা যখন ভারত সফর করেন, তখন চুক্তির কথা হয়েছিল। কিন্তু সারা দুনিয়া জানে ভারতে অভ্যন্তরীণ সমস্যা চলছে। পশ্চিম বঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের টানাপোড়েন চলার কারণে এ নিয়ে দেরী হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এরপর ভারতে সফরে গেলে এ চুক্তি সাক্ষর হবে মওদুদ আহমেদ সহ দেশবাসীকে নিশ্চয়তা দিতে পারি।

তারা চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেনি, ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা সব কিছু জলাঞ্জলি দিয়েছেন। সব জেনেশুনে যদি এ ধরনের কথা বলেন তাহলে তাকে আমি জ্ঞানপাপীই বলবো।”

পরাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি মেওদুদের জবাবে বলেন, মওদুদ আহমেদের সংসদে দেওয়া তথ্য সত্য নয়। তার কথায় শুধু হীনমন্যতায় প্রকাশ পায়, ঐক্যের জন্য উদারতা প্রকাশ পায় না।

তিনি বলেন, “মওদুদ সাহেব বলেছেন, ‘আন্ত:নদী সংযোগ হচ্ছে এবং টিপাইমুখে কাজ চলছে। এ দুটি তথ্য সত্য নয়। তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়ে সঠিত তথ্য নিয়ে যে জাতীয় সংসদে প্রকাশ করা হয় তার অনুরোধ জানান মওদুদসহ বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের।

যখনই শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তখন যথাযথ সিদ্ধান্ত হয়। আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে যত অমিমাংশিত বিষয় রয়েছে সবগুলোর যথাযথ সিদ্ধান্ত হয় এবং বাস্তবায়িত হয়। আমরা যেমন গঙ্গার পানি চুক্তি করেছি, সেভাবেই তিস্তার পানি চুক্তিটির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছি। ভারতের অভ্যন্তরীণ কারণে দেরী হচ্ছে। তবে চুক্তি হবে।

কেন ভারতের কথা তাদের মনে থাকে কিন্তু আর কারোর কথা মনে থাকেনা। মওদুদ সাহেব বলেছেন ৫৪টি, কিন্তু আমাদের অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদী ৫৭টি। ৫৪টি ভারতের সঙ্গে আর তিনটি মায়ানমারের সঙ্গে। এর মধ্যে একটির চুক্তি শেখ হাসিনা করেছেন। আরেকটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্যকোন সরকারের সময় হয়নি।   

তারা সব সময় কিন্তু ভারতের কথাই বলেন আর সব ভুলে যান।”

ঢাকা জার্নাল, জুন ১৭, ২০১৩। 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.