ভোটাধিকার হারালো দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীরা
ঢাকা জার্নাল: বাহাত্তরের দালাল আইন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সাজাপ্রাপ্তরা আর ভোট দিতে পারবে না। বর্তমান ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও তা বাদ যাবে।
যুদ্ধাপরাধীদের ভোটার হওয়ার পথ বন্ধ করতে সংসদে উত্থাপিত বিল রোববার পাস হয়েছে। বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে পাস হওয়া এই বিলটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আইন হিসেবে কার্যকর হবে।
ভোটার তালিকা (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল-২০১৩ শিরোনামে আইন সংশোধনের এই প্রস্তাব রোববার পাসের জন্য উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, এটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
গত ২ সেপ্টেম্বর বিলটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এররপর আইনমন্ত্রী গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন।
তখন এটি পরীক্ষা করতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটির প্রতিবেদনসহ বিলটি রোববার উত্থাপিত হয়।(ট্রাইবুনালস)অ্যাক্ট-১৯৭৩’ এ দণ্ডপ্রাপ্তরা বাংলাদেশের ভোটার হতে পারবেন না।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতেই দালাল আইনে দণ্ডিতদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারবেন, যদি তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত না হয়ে থাকেন। আর সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রেও তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, “ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়া এবং জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় পর্যায়ের যে কোনো নির্বাচনে ভোট প্রদান একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার। এ ধরনের অধিকার প্রাপ্তি ও প্রয়োগের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশের প্রতি তার আনুগত্য।
“যে সব নাগরিক বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না, মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় বিরোধিতা করেছেন এবং যুদ্ধাপরাধসহ গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন এবং যাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এ সব অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়া ও থাকা সমীচীন নয়।” আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়। রায়ে এ পর্যন্ত সাত জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন ছয়জন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযম, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা, মো. কামারুজ্জামান, দলটির সাবেক নেতা আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
এর মধ্যে কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও আপিলের রায়ে তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে।