ভাষা আন্দোলনের পথ দিয়েই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধিকার পেয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগ এবং তার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ দিয়েই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধিকার পেয়েছে, স্বাধীনতা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি। দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশ হচ্ছে একটি ভাষার রাষ্ট্র। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা এই মর্যাদা অর্জন করেছি।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাতৃভাষার আন্দোলন শুরু হয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার আইন বিভাগের ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নেন। তিনি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলেন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আরও কয়েকটি প্রগতিশীল সংগঠনকে নিয়ে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন।
নিজের ভাষা রক্ষা করার মধ্য দিয়ে একটা জাতি উন্নত জীবন পেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়া একটা বিজাতীয় ভাষা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতি নিজের মাতৃভাষাকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য মহান আত্মত্যাগ করেছিল। মাতৃভাষা রক্ষায় যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা দিয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ‘মুজিব শতবর্ষ ভাষা জাদুঘর ও ভাষা লিখনরীতি আর্কাইভস’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রকাশিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি দেশের ছয়টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় ভাষান্তরের প্রকাশনা ও বহুভাষী পকেট অভিধানের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। এ সময় চলতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত রয়েছেন—প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. হাকিম আরিফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।