ব্রাসেলসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি
সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী, পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থার বৈঠকের পর শনিবার এ আদেশ জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রো স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং বাসিন্দাদের ভীড় এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেন, “মোটামুটি নিশ্চিত সূত্র থেকে প্যারিসে যে ধরণের হামলা হয়েছে ঠিক এক ধরণের হামলার ঝুঁকির কথা জানা গেছে।”
“বেশ কয়েকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে সম্ভবত কয়েকটি স্থানে একই সময়ে হামলা চালাতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।”
এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তবে রোববার বিকাল পর্যন্ত সরকার পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কয়েকটি স্থানে একযোগে হামলা চালায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়।
রক্তক্ষয়ী ওই হামলাগুলোর সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী আবদেলহামিদ আবাউদ
বেলজিয়ামের নাগরিক। বুধবার প্যারিস উপকণ্ঠে একটি ফ্ল্যাটে পুলিশি অভিযানে নিহত হয় আবাউদ।
প্যারিস হামলার আরেক সন্দেহভাজন হামলাকারী সালাহ আবেদেস্লামও বেলজিয়ামের নাগরিক। প্যারিস হামলার পর পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সে বেলজিয়ামে প্রবেশ করে। বর্তমানে সে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
ব্রাসেলসের কেন্দ্রস্থলে রাস্তায় পথচারীদের তল্লাশি করছে বেলজিয়ামের পুলিশ ও সেনা সদস্যরা।ছবি: রয়টার্স
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারির পর ব্রাসেলসের বিভিন্ন স্থানে সেনা সদস্যরা টহল দিচ্ছে। ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও নেটো উভয়ের প্রধান কার্যালয় ব্রাসেলসে অবস্থিত।নগরীর বড় বড় শপিং সেন্টার ও সুপার শপগুলো শনিবার সকালে খোলা ছিল এবং সেগুলোর সামনে সেনা সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে আস্তে আস্তে দোকান পাট বন্ধ করে দেয়া হয়।
জাদুঘরগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বিভিন্ন কনসার্ট ভেন্যুতে সন্ধ্যার আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত ফুটবল ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিদিয়ের রেইন্ডারস বলেন, প্রায় এক হাজার সেনা নগরীতে টহল দিচ্ছে। এক সপ্তাহ আগের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুন।
আবাউদ ও আবেদেস্লাম উভয়ই ব্রাসেলসের শহরতলী মলেনবিকে বসবাস করতেন। এই শহরটিকে অনেকে ‘জিহাদি উৎপাদনের খামার’ বলছে।
বিলাল হাদফি নামে আরেক আত্মঘাতী হামলাকারীও বেলজিয়ামের নাগরিক বলে জানিয়েছে বেলজিয়ান কর্তৃপক্ষ।
বেলজিয়ামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জান জামবন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মলেনবিকে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির তালিকা করতে চান। কারণ সেখানে বর্তমানে কারা বসবাস করছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে পরিষ্কার কোনো তথ্য নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে কর্তৃপক্ষ মলেনবিকে প্রত্যেক বাড়িতে যাচ্ছে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে।