ব্রাজিলে পাচার বাংলাদেশিদের ফেরত আনার উদ্যোগ
ঢাকা জার্নাল: ব্রাজিলে পাচার হওয়া ৮০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান৷
সচিব জানান, পাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হবে৷
ব্রাজিলে পাচার হওয়া ৮০ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধারের খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয় শুক্রবার৷ তাদের মাসে দেড় হাজার মার্কিন ডলার বেতনের লোভ দেখিয়ে সেখানে নেয় পাচারকারী চক্র৷ আর এর বিনিময়ে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ হাজার ডলার নেয়া হয়৷ সেখানে নেয়ার পর পাচারকারীরা এই হতভাগ্য বাংলাদেশিদের খুবই নিম্নমানের কাজ দেয়৷ তারা সেখানে ক্রীতদাসের মতো মানবেতর জীবনযাপন করছিল৷ ব্রাজিলের পুলিশ বুধবার তাদের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার কাছে সামাবাইয়া শহরের ৮টি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে৷ তারা সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছিলো৷
প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান জানান, ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির কোনো চুক্তি নেই৷ তাই তারা সেখানে কীভাবে গেল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ তিনি জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে ব্রাজিলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে৷ প্রথম কাজ হচ্ছে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা৷
এজন্য তাদের বিস্তারিত পরিচয় সংগ্রহের চেষ্টা চলছে৷ তাদের ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নেবে সরকার৷ আর সরকারও প্রবাসী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থের সংস্থান করবে এমনটাই জানান সচিব।
জাফর আহমেদ খান জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সি তাদের পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ তবে কারা তাদেরকে পাচার করেছে তা জানতে সময় লাগবে৷ তাদের দেশে ফেরত আনার পর তাদের কাছ থেকেই তা জানা যাবে৷ আর ব্রাজিলের পুলিশের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে৷
তিনি জানান, পাচারকারীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হবে৷
জাফর আহমেদ খান বলেন, “ব্রাজিলে বাংলাদেশ থেকে যেহেতু শ্রমিক রপ্তানির কোনো অনুমতি নেই তাই ধারণা করা হচ্ছে তাদের তৃতীয় কোনো দেশ থেকে ব্রাজিলে পাচার করা হয়৷ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তাদের বাংলাদেশ থেকে ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পেরু, বলিভিয়া এবং গায়ানা হয়ে তাদের ব্রাজিলে নেয়া হয়৷ আর তাদের সেখানে কাজ দেয়া হয় হিমাগার ও গ্যারেজে খুবই কম মজুরিতে৷”
উল্লেখ্য, ব্রাজিলে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার পুলিশ ‘ফ্রিডম’ নামে এক বিশেষ অভিযান শুরু করে৷ সেই অভিযানেই ৮০ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয় বলে জানা গেছে৷
ব্রাজিলের পুলিশ এই পাচারে জড়িত ১৪ জনের একটি চক্রকে চিহ্নিত করেছে৷ তাদের আটকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সেদেশের আদালত৷ ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ জানায় এই চক্রে বাংলাদেশি নাগরিকও আছে৷ আর ৮০ জনকে ভুয়া এবং জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ব্রাজিলে নেয়া হয় বলে জানায় দেশটির পুলিশ৷