বিশ্বের শীর্ষ দশ দৃষ্টিনন্দন আধুনিক ভবন
বিশ্বের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক ১০টি বিল্ডিং বা ইমারত হচ্ছে ওসলোর জুভোলম্যান আইকন বিল্ডিং, ইতালীর মিলানের পালাজ্জো লম্বার্ডিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের পেরোট মিউজিয়াম অব ন্যাচার এন্ড সায়েন্স চীনের বেইজিংয়ের গ্যালাক্সি সহো বিল্ডিং, ব্রিটেনের লন্ডনস্থ দ্য ক্রিষ্টাল, দুবাইয়ের বুর্জ খালিফা, চীনের অরডোস মিউজিয়াম, নিউইয়র্কের ডব্লিউ ৫৭ পিরামিড, দোহার ন্যাশনাল মিউজিয়াম এবং সুইজারল্যান্ডের ওয়াইন মিউজিয়াম।
নরওয়ের রাজধানী ওসলোতে অবস্থিত আকর্ষণীয় জুভোলম্যান আইকন বিল্ডিংয়ের ডিজাইনার হচ্ছেন রেঞ্জো পিয়ানো। ২০১২ সালে ওসলোর নগর কেন্দ্রে উদ্বোধন করা হয় এই আর্টস এন্ড কালচার সেন্টারের। এতে একটি ব্রিজ বা সেতু ৩টি বিল্ডিংকে যুক্ত করেছে। তিনটি বিল্ডিংয়ের একটিতে রয়েছে জাদুঘর একটিতে অফিস এবং অপরটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। পানির মধ্যে থেকে উদ্ধার করা ভূমিতে তৈরী এই ভবনে যেতে হয় নালাসমূহ পেরিয়ে। একটি ভাস্কর্য পার্ক ধীর গতিতে নেমে গেছে সমুদ্রে। উপর থেকে এটা দেখতে অনেকটা ভূমিতে অবতরণকৃত একটি মহাশূন্য যানের মতো যার একটি বাঁকানো কাঠের ছাদ রয়েছে যা পার্কল্যান্ডের সাথে গিয়ে মিলিত হযেছে। ইতালীর মিলানস্থ ৫২৫ ফুট উঁচু অত্যাধুনিক পালাঞ্জো লম্বার্ডিয়া ভবনটির ডিজাইনার হচ্ছে পেই কব ফ্রিড এন্ড পার্টনার্স কোম্পানী। পরিবেশ বান্ধব এই ভবনটির নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে সম্পন্ন হয়। এই ভবনের আলোকিত অফিস স্পেস চমৎকারভাবে যুক্ত বাইরের এলাকার সাথে। এই ভবনের বিশাল পাবলিক স্পেসসমূহ ফ্লুরিন ভিত্তিক প্লাস্টিকের তৈরী স্বচ্ছ পিলোজে তৈরী একটি ছাদে আবৃত। এছাড়া এতে রয়েছে পরিবেশ স্পর্শকাতর সবুজ ছাফ, অ্যাক্টিভ জলবায়ূ দেয়াল, স্বচ্ছতা বৃদ্ধির সময়ে ছায়া প্রদানের জন্য ঘূর্ণায়মান আড়াআড়ি ব্লেডসহ দু’টি স্তরের আলাদা গ্লাস। এছাড়া ভবনে রয়েছে একটি জিওথার্মাল হিটিং ব্যবস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের ‘পেরোট মিউজিয়াম অব ন্যাচার এন্ড সায়েন্স ভবনটি ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন করা হয়। ১ লাখ ৮০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই ভবনটির নকশাকার হচ্ছেন প্রিৎজকার পুরস্কার বিজয়ী স্থপতি থম মেইন। এই ভবন শহুরে ও প্রকৃতির শ্যামলিমার সমন্বয়ে তৈরী করা হয়েছে।
এছাড়া নিউইয়র্কের ডব্লিউ ৫৭ পিরামিড নামক ভবনটি ৬০০ ইউনিটের একটি আবাসিক ভবন। পিরামিডের আকৃতিতে তৈরী এই ভবনের ডিজাইনার হচ্ছেন ডেনিশ বিআইজি ফার্মের প্রধান স্থপতি জার্কে ইঞ্জেলস্। এই আকাশচুম্বী ভবনের চারপাশে রয়েছে একটি সবুজ শ্যামল পরিসর। এর প্রতিটি এপার্টমেন্টে রয়েছে প্রাকৃতিক আলোর প্রবেশের সুবিধা।
চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত গ্যালাক্সি সহো বিল্ডিং। এর ডিজাইনার ইরাকী ব্রিটিশ মহিলা স্থপতি জাহা হাদিদ। তিনি প্রথম ্িরৎজকার পুরস্কার বিজিয়ী নারী। ১৮ তলা বিশিষ্ট এই ববনে রয়েছে অফিস ও বিনোদন কেন্দ্র। এর চার গম্বুজ বিশিষ্ট কাঠামোটি ব্রিজ ও প্লাটফর্ম সমূহের দ্বারা যুক্ত। এটা তৈরী ব্যবহৃত হয়েছে এলুমিনিয়াম, পাথর, কাঁচ ও স্টেইনলেস স্টিল।
লন্ডনের রয়েল ভিক্টোরিয়া ডকে দ্য ক্রিস্টালন বিল্ডিং ‘ক্রিস্টালাইন ফর্ম’ বা স্ফটিক আকৃতিতে তৈরী করা হয়েছে।
শিল্প বিপ্লবের আধুনিক প্রযুক্তি প্রদর্শনকারী ১৮৫১ সালের লন্ডনের ‘গ্রেট এক্সিবিশন-এর একটি বহুমুখী শাহুরিক বিশ্ব ও ক্রিস্টাল প্যালেস উপস্থাপনকারী এই ভবনটিতে অনেক আধুনিকতম বিষয় ও সংযোজত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, ব্ল্যাক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বা কালোপানি শোধন, সৌরশক্তির হিটিং ব্যবস্থা এবং ইলেক্ট্রিক কারের জন্য চার্জিং স্টেশন অন্তর্ভুক্ত।
দুবাইয়ের বুর্জ আল খালিফা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। ২০১০ সালে এটা উদ্বোধন করা হয়। ২৭১৭ ফুট উঁচু ‘বুর্জ আল খালিফায়’ সর্বোচ্চ সংখ্যক তলা, সবচেযে উঁচু পর্যবেক্ষণ ডেক এবং বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রমকারী ইলিভেটর বা চলন্ত সিঁড়ি রয়েছে এতে।
চীনের অর্ডোস মিউজিয়াম ভবনটির ডিজাইনার বেইজিং ভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ম্যাড। অর্ডোস মিউজিয়ামের কপার টোনড্ ধাতব বহির্ভাগ এবং আন্দোলিত অর্থাৎ ঢেউ আকৃতিতে ইনার মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমির পরিবেশের প্রতিফলন ঘটেছে।
কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত কাতার জাতীয় জাদুঘর ভবনটি শৈল্পিক উৎকর্ষের নিদর্শন। জ্যামিতিক ও কাব্যিক ধাচে নির্মিত এই ভবনটি গ্লাস ফাইবার রিইনফোর্সড কংক্রিট প্যানেলে আবৃত। মরুভূমির স্ফটিককৃত বালির দ্বারা অনুপ্রাণিত ফরাসী স্থপতি জীন নোভেল এর ডিজাইনার। এর অবয়বে মরুভূমির পরিবেশ ও প্রকৃতি ফুটে উঠেছে।
সুইজারল্যান্ডের ওয়াইন মিউজিয়াম দেশটির মদ উৎপাদনকারী লভুঁ অঞ্চলে অবস্থিত। সুইস স্থপতি মরো তুরিনের নকশাকৃত এই ভবনটি একটি পর্বতের পার্শ্বে অবস্থিত যেখান থেকে ঐতিহাসিক আঙ্গুর ক্ষেত দেখা যায়। দৃশ্যটি অনেকটা ১১ শতকের। দর্শকদের পর্বতের পার্শ্ব থেকে নেমে আসা একটি কাঁচ ও ইস্পাত নির্মিত পথ ধরে হেঁটে যেতে হয় ববনে যেতে হলে।