বিরোধী দল চাইলেই আলোচনা
ঢাকা: বিরোধী দলের দেওয়া মুলতবি প্রস্তাব প্রত্যাহারের পরেও বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, “বিরোধী দল চাইলে যেকোন আলোচনার সুযোগ দেয়া হবে। সংসদে বিরোধী দলের সাথে কোনো বৈষম্য করা হচ্ছে না।”
শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘জেন্ডার মেইনস্ট্রিমিং ইন বাংলাদেশ পার্লামেন্ট’ শীর্ষক পলিসি ব্রিফ অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পিকার এ কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে বিএনপির মুলতবি প্রস্তাব প্রত্যাহার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পিকার আরো বলেন, “তাদের প্রস্তাব নিয়ে কথা বলার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।”
‘বিরোধী দলের সাথে আর আলোচনার সুযোগ নেই, মুলতবি প্রস্তাব প্রত্যাহার করে সেই পথ বন্ধ করেছে বিরোধী দল’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সংসদ কার্যকর রাখতে শনিবার স্পিকার জানালেন যেকোনো আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে।”
এর আগে শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এক আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘বিরোধী দলের সাথে আর আলোচনার সুযোগ নেই। মুলতবি প্রস্তাব প্রত্যাহার করে সে রাস্তা তারা বন্ধ করে দিয়েছে।”
বিরোধী দলের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পিকার বলেন, “সুনির্দিষ্ট বিধি নিয়ে একটি কনফিউশান তৈরি হয়েছিলো। আমি তাদের পয়েন্ট অব অর্ডার ফরমুলেট করতে বলেছিলাম। কোনো বৈষম্য করা হয়নি। আর বৈষম্যের সুযোগও নেই।”
গত বুধবার জাতীয় সংসদে আসিফা আশরাফী পাপিয়া কথা বলতে চাইলে স্পিকার তাকে ‘বিধিসম্মত ভাবে’ পয়েন্ট অব অর্ডার ‘ফরমুলেট’ করতে বলেন। তবে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলতে দেওয়া হয়নি, অভিযোগ তুলে বিরোধী দল ওয়াকআউট করে।
এর আগে ২২ মে সংসদ সচিবালয়ে ‘তত্ত্বাবধায়ক’ ফিরিয়ে আনার দাবিতে মুলতবি প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দল।
পরে ১৮তম অধিবেশন শুরুর দিন সোমবার তা প্রত্যাহার করে নেয় বিএনপি।
বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্পিকার বলেন, বাজেট উপস্থাপনের দিন ছাড়া বাকি সময়গুলোতে তারা সংসদে ছিলেন। বাকি সময়টুকুতে থাকবেন বলে আশা করি।”
জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের বাস্তবায়নাধীন ইমপ্রুভিং ডেমোক্রেসি থ্রু পার্লামেন্টারি ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) প্রকল্প এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র যৌথ উদ্যোগে ‘জেন্ডার মেইনস্ট্রিমিং ইন বাংলাদেশ পার্লামেন্ট’ শীর্ষক পলিসি ব্রিফ উপস্থাপন এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপত্প্রবি করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতাকরণের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারি কান্ট্রি ডিরেক্টর অন ইয়ং হং ও আইপিডি প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক প্রণব চক্রবর্তী ।
‘জেন্ডার মেইনস্ট্রিমিং ইন বাংলাদেশ পার্লামেন্ট’ শীর্ষক ‘পলিসি ব্রিফ উপস্থাপন করেন ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) এর জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ও গবেষক শেরিল হুইটিংটন।
অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাতীয় সংসদের সংসদ-সদস্যবৃন্দ, নারী নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। আলোচকবৃন্দ নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতাকরণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাকালে বলেন, নারী ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতাকরণ ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন তৃণমূল পর্যায়ে গণসচেনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখা, নারীদের জন্য সংসদে সুনির্দিষ্ট আসন বিন্যাস করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদে নিয়োগ বাড়ানো, নারীদের আর্থিক স্বচছলতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করা এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে আরো সুসম্পর্ক গড়ে তোলা।
ঢাকা জার্নাল, জুন ৮, ২০১৩।