বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা ফিরে যাচ্ছে সংসদে
ঢাকা জার্নাল: সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থাকছে না। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে ফিরে যাচ্ছে সরকার। আর তাই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতাও চলে যাচ্ছে জনপ্রাতনিধিদের হাতে।
যুক্তরাজ্য সফর শেষে শনিবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি স্পষ্ট করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল খাপ খায় না। তাই আমরা চলে যেতে চাই ১০৭২-এর সংবিধানে।
১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষতা দেওয়া ছিল সংদের হাতে। পরে সামরিক সরকার ৯৬ অনুচ্ছেদ বাতিল করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে এই ক্ষমতা দেয় কাউন্সিলের হাতে।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ‘বিচারকদের পদের মেয়াদ’ শীর্ষক ৯৬ অনুচ্ছেদে ২ দফায় বলা হয়- ‘প্রমাণিত ও অসাদচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।’
১৯৭২ সালের সংবিধানের এই অনুচ্ছেদটি বাতিল করেন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান। এক সামরিক ফরমানে এই অনুচ্ছেদ বাতিল করে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন। বিচারপদিরে অপসারণের ক্ষমতা চলে যায় কাউন্সিলের হাতে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়ার রহমান সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল করেছিলেন। গণতান্ত্রিক ধারায় এটি খাপ খায় না। তাই বিষয়টি নিয়ে আইন কমিশন ও মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকেই ৭২ সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন জিয়াউর রহমানের শামনকাল অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। যখন আমরা একটি সর্বদলীয় বিশেষ কমিটি করে সংবিধান সংশোধন করি। তখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু দেশে গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চলছে। জনগণই রাষ্ট্রের মালিক। তাই জনগণের প্রতিনিধিদের হাতেই ক্ষমতা থাকা উচিত।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্পিকার থাককালে ২০১২ সালে হাইকোর্টের এক বিচারপতির অপসারণের দাবি উঠলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় সংসদে। সংসদ সদস্যরা দাবি করেন বিচারপতিদের অপরাসণের ক্ষমতা জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে থাকা উচিত। সংসদ সদস্যরা ওই সময় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে আনার দাবিও করেন।
তবে সংবিধান সংশোধনের সময় ৯৬ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা হয়নি। সর্বমেষ আইন কমিশন গত ২৬ জুন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে একটি সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেয়। সম্প্রতি এ বিষয়টি নিয়ে পত্র-পক্রিকায়ে লেখালেখিও হয়। এরই এক পর্যায়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
ঢাকা জার্নাল: জুলাই ২৬, ২০১৪