আর্ট এন্ড কালচার

বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ পেলেন ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ-২০২০ প্রদান করা হয়েছে। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাধারণ পরিষদের ৪৩তম বার্ষিক সভায় এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।

পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন: ১. ডা. সারওয়ার আলী (মুক্তিযুদ্ধ), ২. নুরুল ইসলাম নাহিদ (শিক্ষা), ৩. নুহ-উল-আলম লেনিন (সমাজদর্শন ও সাহিত্য), ৪. অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান (চিকিৎসাসেবা), ৫. লিয়াকত আলী লাকী (সংস্কৃতি), ৬. জুয়েল আইচ (জাদুশিল্প) এবং ৭. মনজুরুল আহসান বুলবুল (সাংবাদিকতা)।

এছাড়াও বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রবীন্দ্র পুরস্কার-২০২০, একাডেমি পরিচালিত সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার-২০২০, কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার-২০২০ এবং সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার-২০২০ প্রদান করা হয়।

শিল্পী সাধন ঘোষ বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রবীন্দ্র পুরস্কার-২০২০; প্রাবন্ধিক রফিক কায়সার সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার-২০২০; শিশুসাহিত্যিক শাহরিয়ার কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার-২০২০ এবং প্রাবন্ধিক জুলফিকার মতিন সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার-২০২০-এ ভূষিত হয়েছেন।

রবীন্দ্র পুরস্কারের অর্থমূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা; সাহিত্যিক মোহম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা; কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লক্ষ টাকা এবং সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা।

পুরস্কার ও ফেলোশিপপ্রাপ্ত গুণীজন এবং তাঁদের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য, সম্মাননাপত্র, সম্মাননা-স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা তুলে দেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এবং মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

অনুষ্ঠানে একাডেমির প্রয়াত সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে নিবেদিত, হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও পিয়াস মজিদ সম্পাদিত বাংলা একাডেমি ও আনিসুজ্জামান গ্রন্থের উন্মোচন করা হয়।

বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনার আগ্রাসনে গোটা বিশ্ব ও বাংলাদেশ যখন বিপর্যস্ত তখন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে একাডেমি গত প্রায় একবছর গুরুত্বপূর্ণ নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। এ বছরের সাধারণ সভা সীমিত পরিসরে হলেও সবার অংশগ্রহণে তা হয়ে উঠেছে তাৎপর্যপূর্ণ।’

জাতীয় অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘বাঙালির প্রাণের প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমিকে ঘিরে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার অন্ত নেই। এই প্রত্যাশা অত্যন্ত সঙ্গত, কারণ বাংলা একাডেমি প্রকৃতই বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক প্রতিষ্ঠান।’

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং একাডেমির সচিব (ভারপ্রাপ্ত) অপরেশ কুমার ব্যানার্জী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেন। একাডেমির সদস্যবৃন্দ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন। মহাপরিচালক সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য দেন।

সভায় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী সারাদেশ থেকে আগত একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য ও সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করেন বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২০-এর সভাপতি এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

সাধারণ সভার কার্যক্রম সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম এবং উপপরিচালক নূরুন্নাহার খানম-সহ একাডেমির অন্যান্য কর্মকর্তারা।